চার্জের কোয়ান্টায়ন কি? (What is Quantization of charge)
একটি ইলেকট্রন বা প্রোটনের চার্জই হলো প্রকৃতিতে ন্যূনতম মানের চার্জ। একটি ইলেকট্রনের চার্জকে (−e) এবং একটি প্রোটনের চার্জকে (+e) দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এর মান e = 1.60218 × 10-19 C। পরীক্ষার সাহায্যে দেখা যায় যে, প্রকৃতিতে কোনো বস্তুর সর্বমোট চার্জ একটি নির্দিষ্ট ন্যূনতম মানের পূর্ণ সংখ্যার গুণিতক। ইলেকট্রনের চার্জই হলো এই নির্দিষ্ট ন্যূনতম মান। সকল চার্জিত বস্তুর মধ্যে বিদ্যমান চার্জই এ ক্ষুদ্রতম চার্জের গুণিতক মাত্র; অর্থাৎ ইলেকট্রনের চার্জের গুণিতক হবে। একে চার্জের কোয়ান্টায়ন বলে।
কোনো বস্তুতে যে কোনো মানের চার্জ থাকতে পারে না। ইলেকট্রনের চার্জ e হলে কোনো বস্তুর মোট চার্জ q = ne। এখানে n হলো ধনাত্মক বা ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা।
চার্জের নিত্যতা বা সংরক্ষণশীলতা কি? (What is Conservation of charge?)
একটি কাচদণ্ডকে রেশমি কাপড় দ্বারা ঘর্ষণ করলে কাচ দণ্ড ধনাত্মক চার্জে আহিত হয় এবং রেশমি কাপড় ঋণাত্মক চার্জে আহিত হয়। এটা মনে করা স্বাভাবিক যে কাচ দণ্ডে এবং রেশমি কাপড়ে যথাক্রমে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক চার্জ সৃষ্টি হয়েছে। আসলে তা নয়। কাচদণ্ড ও রেশমি কাপড়ের সম্মিলিত বা মোট চার্জ একই রয়েছে। শুধুমাত্র কাচদণ্ড থেকে ইলেকট্রন রেশমি কাপড়ে ঘর্ষণের ফলে স্থানান্তরিত হয়েছে; যার ফলে কাচ দণ্ডে ধনাত্মক চার্জ বেশি হওয়ায় ধনাত্মক এবং রেশমি কাপড়ে ইলেকট্রনের আধিক্য হওয়ায় ঋণাত্মক হয়েছে। অর্থাৎ ঘর্ষণের ফলে কোনো নতুন আধানের সৃষ্টি হয় না বরং এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে আধানের স্থানান্তর ঘটে। বিশ্বের মোট চার্জের পরিমাণ সর্বদা একই থাকে।
এই আলোচনা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, তড়িৎ আধান সৃষ্টি বা উৎপন্ন হয়— এটা বলা প্রকৃতপক্ষে সঠিক নয়। তড়িতাহিতকরণের সময় তড়িতাধান উৎপন্ন হয় না; কেবলমাত্র কিছু সংখ্যক ইলেকট্রন এক পদার্থ হতে অন্য পদার্থে স্থানান্তরিত হয়। সুতরাং একটি বস্তুকে কোনো আধানে আহিত করলে অন্যত্র অবশ্যই সমপরিমাণ বিপরীত আধানের উদ্ভব হয়। প্রোটন ও ইলেকট্রন আবিষ্কারের বহু পূর্বেই এ তথ্য জানা ছিল। একটি ধনাত্মক বা ঋণাত্মক চার্জের সৃষ্টি বা ধ্বংস কখনই সম্ভব নয়। যুগপৎ ধনাত্মক ও ঋণাত্মক চার্জের সৃষ্টি বা ধ্বংস হয়। একেই চার্জের নিত্যতা বা সংরক্ষণশীলতা বলে।