স্বরকম্প বা বিট কাকে বলে? বীট উৎপত্তির শর্ত, বৈশিষ্ট্য এবং ব্যবহার।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সমান বা প্রায় সমান বিস্তারের দুটি শব্দ তরঙ্গ একই সময় একই সরলরেখা বরাবর একই দিকে সঞ্চালিত হতে থাকলে এদের উপরিপাতনের ফলে শব্দে তীব্রতার যে পর্যায়ক্রমিক হ্রাস বৃদ্ধি ঘটে তাকে স্বরকম্প বা বিট বলে।

বীট উৎপত্তির শর্ত

  • বীট সৃষ্টিকারী শব্দ তরঙ্গ দুটি একই সময়ে উৎপন্ন হতে হবে।
  • তরঙ্গ দুটির কম্পাঙ্ক ও তীব্রতা প্রায় সমান হতে হবে।
  • তরঙ্গ দুটির দরুন মাধ্যমের কোনো একটি কণার সরণ একই রেখায় হতে হবে।
  • মাধ্যমের কোনো একটি কণার উপর তরঙ্গ দুটি মিলিত হবার পর তাদের মধ্যে দশা বৈষম্য সময়ের সাথে পরিবর্তিত হবে।
  • তরঙ্গ দুটির মিলিত ক্রিয়ার বিস্তার সময়ের সাথে পরিবর্তিত হবে।

 

বীটের বৈশিষ্ট্য

  • সমান বা প্রায় সমান তীব্রতা এবং প্রায় সমান কম্পাঙ্কবিশিষ্ট একই দিকে অগ্রগামী দুটি শব্দতরঙ্গের উপরিপাতনের ফলে শব্দের লব্ধি প্রাবল্যের পর্যায়ক্রমিক হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে বীট সৃষ্টি হয়।
  • বীটের ক্ষেত্রে কোনো বিন্দুতে তরঙ্গ দুটির মধ্যে দশা পার্থক্য সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়।
  • শব্দের তীব্রতা সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়।
  • লব্ধি তরঙ্গের কম্পাঙ্ক বীট উৎপন্নকারী তরঙ্গদ্বয়ের গড় কম্পাঙ্কের সমান হয়।

 

স্বরকম্প বা বিট এর ব্যবহার: (i) বাদ্যযন্ত্রের সুর মেলানো, (ii) অজানা কম্পাঙ্ক নির্ণয়, (iii) খনিতে দূষিত গ্যাসের অস্তিত্ব নির্ণয়ে স্বরকম্পের ব্যবহার হয়।

কীভাবে বিটের সাহায্যে খনিতে দূষিত গ্যাসের অস্তিত্ব নির্ণয় করা যায়?

খনিতে দূষিত গ্যাসের অস্তিত্ব নির্ণয় করার জন্য অভিন্ন প্রকৃতির দুটি অর্গান নল নিই। নল দুটির একটিতে খনির বাতাস এবং অন্যটিতে বিশ্বদ্ধ বাতাস নিয়ে নল দুটিতে একই সঙ্গে শব্দ উৎপন্ন করি। খনির বাতাস দূষিত হলে সৃষ্ট শব্দের কম্পাঙ্কের পার্থক্য থাকবে। ফলে বীট বা স্বরকম্পের সৃষ্টি হবে। কিন্তু খনির বাতাস বিশুদ্ধ হলে শব্দের কম্পাঙ্কের পার্থক্য থাকবে না অর্থাৎ বীট সৃষ্টি হবে না। এভাবে সৃষ্ট শব্দ থেকে উৎপন্ন বীটের সাহায্যে খনিতে দূষিত গ্যাসের অস্তিত্ব নির্ণয় করা যায়।