ঘনত্ব পদার্থের একটি সাধারণ ধর্ম। কোনো বস্তুর একক আয়তনের ভরকে তার উপাদানের ঘনত্ব বলে। ঘনত্ব বস্তুর উপাদান ও তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল। ঘনত্বকে ρ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। m ভরের কোনো বস্তুর আয়তন V হলে, ঘনত্ব ρ হবে।
ঘনত্বের একক Kgm−3।
দৈনন্দিন জীবনে ঘনত্বের ব্যবহার
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘনত্বের ব্যবহার ব্যাপক। অনেক ক্ষেত্রে আমরা জেনে আবার অনেক ক্ষেত্রে না জেনেই ব্যবহারিক জীবনে বস্তুর ঘনত্বের বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগাই।
আমাদের দেহের ঘনত্ব বাতাসের ঘনত্ব থেকে বেশি বলে আমরা মাটিতে হাটতে বসতে বা চলাফেরা করতে পারি। পানিতে ভাসার ক্ষেত্রে আমাদের দেহের অভ্যন্তরের বাতাস সহায়তা করে।
বাতাসের ঘনত্ব পানির ঘনত্ব থেকে কম। নৌকা, ভেলা, পানিতে ভাসমান দ্রব্য নির্মাণে পানি থেকে কম ঘনত্ব সম্পন্ন বস্তু ব্যবহৃত হয় বা এমন কৌশল ব্যবহৃত হয় যাতে ভাসমান বস্তুকে পানি থেকে হালকা করে দেয়।
বেলুন ওড়ানাের জন্য এর মধ্যে হিলিয়াম গ্যাস ভর্তি করা হয়। হিলিয়াম গ্যাসের ঘনত্ব বাতাসের ঘনত্ব থেকে কম তাই বেলুন বাতাসের মধ্যে উপরে উঠে যায়।
কার্বন মনাে অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড অত্যন্ত বিষাক্ত গ্যাস, এর মধ্যে শ্বাস নেয়া যায় না। কিন্তু এরা অক্সিজেন, নাইট্রোজেন থেকে ভারি বলে বায়ুমন্ডলের একেবারে নিচে অবস্থান করে, ফলে আমরা বায়ুতে স্বচ্ছন্দে শ্বাস নিতে পারি।
পানি থেকে পানির বাষ্প বা গরম বাতাসের ঘনত্ব কম বলে খাবার রান্না করার সময় বা তপ্ত খাবার ঠান্ডা করার জন্য পাত্রের মুখ খােলা রাখা হয়। জলীয় বাষ্প কম ঘনত্বের কারণে আকাশে উঠে, যা মেঘের সৃষ্টি করে। বায়ুমন্ডলের বাতাস থেকে পানির ঘনত্ব বেশি বলে বৃষ্টির পানি পৃথিবী পৃষ্ঠে নেমে আসে। তাপের প্রভাবে বায়ুমন্ডলের বাতাসের ঘনত্বের তারতম্য হয় বলেই পৃথিবীতে বায়ু প্রবাহ হয়। অধিক ঘন বস্তু অধিক শক্ত হয়। তাই নির্মাণ ক্ষেত্রে নির্মাণ সামগ্রী নির্বাচনে প্রয়ােজনীয় বলের হিসাব অনুয়ায়ী পদার্থ ব্যবহার করা হয়।