ভূ-ত্বক যে সকল উপাদানে গঠিত এদের সাধারণ নাম শিলা। শিলা বলতে সাধারণত কঠিন প্রস্তরকে বোঝায়। কিন্তু ভূতাত্ত্বিকদের মতে দুই বা ততোধিক খনিজ পদার্থের মিলনে যে পদার্থ গঠিত হয়, তাকে শিলা বলে। গ্রানাইট, গ্যাব্রো, টাফ, ব্রেসিয়া, ব্যাসন্ট ইত্যাদি শিলার উদাহরণ।
শিলার শ্রেণীবিভাগ
শিলা প্রধানত তিন প্রকার। যথা–
১। আগ্নেয় শিলা
২। পাললিক শিলা
৩। রূপান্তরিত শিলা
বিভিন্ন প্রকার শিলার বর্ণনাঃ
১। আগ্নেয় শিলা : ভূগর্ভস্থ গরম তরল পদার্থগুলো শীতল হয়ে যে শিলার সৃষ্টি হয়, তাকে আগ্নেয় শিলা বলে। আগ্নেয় শিলা দুই প্রকার। যথা—
ক. উদ্বেধী ও
খ. নিঃসারী।
উদ্বেধী আগ্নেয় শিলা দুই ভাগে বিভক্ত। যথা–
ক. পাতালিক শিলা ও
খ. উপপাতালিক শিলা।
গ্রানাইট, গ্যাব্রো, সায়েনাইট, ডায়োরাইট প্রভৃতি পাতালিক শিলা এবং পরফাইরি উপপাতালিক শিলার উদাহরণ।
নিঃসারী আগ্নেয় শিলাও দুই ভাগে বিভক্ত। যথা–
ক. বিস্ফোরক ও
খ. শান্ত।
টাফ ও ব্রেসিয়া বিস্ফোরক শিলা এবং রায়োলাইট, ব্যাসল্ট, অ্যাণ্ডেসাইট ইত্যাদি শান্ত শিলার উদাহরণ।
২। পাললিক শিলা : পলি সঞ্চিত হয়ে যে শিলা গঠিত হয় তাকে পাললিক শিলা বলে। পাললিক শিলা প্রধানত তিন প্রকার। যথা–
ক. যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট পাললিক শিলা,
খ. রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট পাললিক শিলা এবং
গ. জৈবিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট পাললিক শিলা।
যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট পাললিক শিলার উদাহরণ— নুড়িপাথর, বেলে পাথর, পলি পাথর ইত্যাদি।
রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট পাললিক শিলার উদাহরণ– চুনাপাথর, ডোলোমাইট, লবণ ইত্যাদি।
জৈবিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট পাললিক শিলার উদাহরণ— কয়লা ও চুনাপাথর।
পাললিক শিলার বৈশিষ্ট্য : স্তরায়ন, তরঙ্গ ছাপ, কদমফাটল প্রভৃতি পাললিক শিলার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।
৩। রূপান্তরিত শিলা : কোন শিলায় তাপ, চাপ ও রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে এর খনিজ উপাদান ও বুনটের পরিবর্তন হয়ে যে নতুন শিলার সৃষ্টি হয় তাকে রূপান্তরিত শিলা বলে।
আগ্নেয় বা পাললিক শিলা পরিবর্তনের মাধ্যমে রূপান্তরিত শিলার সৃষ্টি হয়।