স্বরসন্ধি কাকে বলে?
স্বরবর্ণের সাথে স্বরবর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয় তাকে স্বরসন্ধি বলে। যেমন– শক + অব্দ = শকাব্দ, স্ব + অর্থ = স্বার্থ, রবি + ইন্দ্র = রবীন্দ্র, গিরি + ঈশ = গিরীশ, সতী + ইন্দ্র = সতীন্দ্র, শচী + ঈশ = শচীশ, কটু + উক্তি = কটুক্তি, লঘু + ঊর্মি = লঘূর্মি, ভূ + ঊর্ধ্ব = ভূর্ধ্ব, নর + ইন্দ্র = নরেন্দ্র, পৌ + অক = পাবক, পিতৃ + আলয় = পিত্রালয়, মহা + ওষধি ইত্যাদি।
ব্যঞ্জনসন্ধি কাকে বলে?
ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে স্বরবর্ণের অথবা ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে ব্যঞ্জন বর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয় তাকে ব্যঞ্জনসন্ধি বলে। যেমন– মুখ + ছবি = মুখচ্ছবি, বাক্ + ধারা = বাগধারা, সম্ + সার = সংসার, উৎ + যাপন = উদযাপন, তৎ + অবধি = তদবধি, এক + দশ = একাদশ, দিক্ + অন্ত = দিগন্ত, দিক + গজ = দিগগজ, উৎ + ভব = উদ্ভব, সৎ + ভাব = সদ্ভাব ইত্যাদি।
বিসর্গসন্ধি কাকে বলে?
বিসর্গের সাথে স্বরবর্ণ বা ব্যঞ্জনবর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয় তাকে বিসর্গসন্ধি বলে। যেমন– নিঃ + চয় = নিশ্চয়, দুঃ + চরিত্র = দুশ্চরিত্র, নিঃ + ঠুর = নিষ্ঠুর, নিঃ + তেজ = নিস্তেজ, ভাঃ + কর = ভাস্কর, চতুঃ + পদ = চতুষ্পদ, নিঃ + ফল = নিষ্ফল, দুঃ + দর্শা = দুর্দশা, মনঃ + যোগ = মনোযোগ ইত্যাদি।
নিপাতনে সিদ্ধ স্বরসন্ধি ও ব্যঞ্জনসন্ধি কাকে বলে?
সন্ধির যে নিয়মগুলো প্রচলিত আছে, সেগুলোকে না মেনে অর্থাৎ সন্ধির প্রচলিত সূত্রগুলোকে অস্বীকার করে যে সন্ধি সংঘটিত হয়, তাকে নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি বলা হয়।
এ সন্ধিগুলোকে ভুল বলা যায় না বা এ সন্ধির দ্বারা সাধিত পদগুলোকেও অশুদ্ধ বলা যায় না। এ সন্ধিগুলো সিদ্ধ; অর্থাৎ ব্যাকরণে স্বীকৃত এবং পদগুলোও শুদ্ধ।
নিপাতনে সিদ্ধ স্বরসন্ধি : স্বরসন্ধির নিয়ম না মেনে যে সন্ধি হয় তাকে, নিপাতনে সিদ্ধ স্বরসন্ধি বলে। যেমন– গো + অক্ষ = গবাক্ষ, সীমা [সীমন্] + অন্ত = সীমন্ত, প্র + ঊঢ় = পৌঢ়, অক্ষ + ঊহিণী = অক্ষৌহিণী, মনস্ + ঈষা = মনীষা ইত্যাদি।
নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি : ব্যঞ্জনসন্ধির প্রচলিত নিয়মগুলো না মেনে যে ব্যঞ্জনসন্ধি সংঘটিত হয়, তাকে নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি বলে। যেমন– তৎ + কর তস্কর, হরি + চন্দ্র, আ + চর্য = আচর্য, বৃহৎ + পতি = বৃহস্পতি, বন + পতি = বনস্পতি, গো + পদ = গোষ্পদ, ষট্ + দশ = ষোড়শ, এক + দশ = একাদশ, অষ্ট + দশ = অষ্টাদশ ইত্যাদি।