উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই, কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে।— ব্যাখ্যা করো।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্র, পরা, সম্, নি প্রভৃতি উপসর্গ। এ উপসর্গগুলো যখন স্বাধীন অবস্থায় থাকে, অন্য কোনো শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয় না, তখন সেগুলো এক বা একাধিক বর্ণের সমষ্টিমাত্র। এদের নিজেদের কোনো অর্থ নেই, অর্থাৎ অর্থবাচকতা নেই।

[এ কথা বাংলায় ব্যবহৃত ইংরেজি ‘head’ (হেড্‌=প্রধান), ‘half’ (হাফ্=অর্ধেক), sub (সাব্= অধীন), আরবি, ‘আম’, ‘গর’, ‘খাস’, ‘বাজে’, ফারসি ‘বদ’ ইত্যাদি বিদেশি উপসর্গগুলো সম্বন্ধে ততটা প্রযোজ্য নয়। কারণ সেগুলোর নিজের অর্থ আছে।]

কিন্তু অন্য শব্দের পূর্বে যুক্ত হলে উপসর্গগুলো হাতলের অগ্রভাগে যুক্ত অস্ত্রের মতোই শক্তিশালী। তখন শব্দের পূর্বে যুক্ত উপসর্গগুলো বিভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে এবং তাদের অর্থদ্যোতকতা দেখা যায়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ‘হার’ শব্দটির অর্থ ‘পরাজয়’। কিন্তু ‘হার’ শব্দের সঙ্গে ‘প্র’ উপসর্গ যোগে নিষ্পন্ন ‘প্রহার’ শব্দের অর্থ— ‘মারা’।  ‘প্র’ উপসর্গটি এখানে ‘নির্যাতন’ অর্থ প্রকাশ করেছে। ‘বি’ উপসর্গযোগে ‘বিহার’ অর্থ— ‘সানন্দে বিচরণ’। ‘বি’ উপসর্গটি এখানে ‘হার’ শব্দযোগে বিশেষ অর্থ দ্যোতনা করেছে।

‘পরি’ উপসর্গযোগে ‘পরিহার’ অর্থ— ‘পরিত্যাগ’।  ‘উপ’ উপসর্গযোগে উৎপন্ন ‘উপহার’ অর্থ— ‘উপঢৌকন’। ‘সম্’ উপসর্গযোগে তৈরি ‘সংহার’ অর্থ— ‘বিনাশ’। এখানে ‘পরি’ ‘বিশেষভাবে’ ‘উপ’ ‘প্রীতি’ এবং ‘সম’ সম্পূর্ণ অর্থ দ্যোতনা করেছে।

সুতরাং বলা যায়, উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই বটে, কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে।

এ সম্পর্কিত আরও কিছু প্রশ্নঃ-

 

  • উপসর্গ কাকে বলে? এদের কাজ কী? কী কী ভাবে এদের প্রয়োগ করা হয়?
  • উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গ কয় প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ লেখ।
  • উপসর্গ কী? খাঁটি বাংলা উপসর্গ কয়টি?
  • বাংলা উপসর্গ কয়টি ও কী কী?
  • সংস্কৃত উপসর্গ কয়টি ও কী কী?
  • উপসর্গ ও অনুসর্গের পার্থক্য কী?
  • উপসর্গ ও বিভক্তির মধ্যে পার্থক্য কী?
  • উপসর্গের নিজস্ব কি