১। অনুসর্গ বা কর্মপ্রবচনীয় : যেসব অব্যয় শব্দ বিশেষ্য ও সর্বনামের পরে স্বাধীনভাবে অথবা শব্দ-বিভক্তিরূপে ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে, তাদের অনুসর্গ বা কর্মপ্রবচনীয় বলে।
২। অব্যয় পদ : যে পদের কোনো অবস্থাতেই পরিবর্তন হয় না, তাকে অব্যয় পদ বলে। যেমন— সে, তুমি ও আমি যাব। মরি মরি! কি চমৎকার সন্ধ্যা!
৩। অনন্বয়ী অব্যয় : অব্যয় পদ বাক্যের অন্য পদের সঙ্গে সম্মন্ধ রাখে না, তাকে অনন্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন- ছি ছি! তোমার এ কাজ। মরি মরি! কি চমৎকার সন্ধ্যা!
৪। কারক অব্যয় : যেসব অব্যয় শব্দ-বিভক্তিরূপে ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে তাদের কারক অব্যয় বলে। যেমন- সে বাঘ থেকে ভয় পায়। তোমা দ্বারা এ কার্য হবে না সাধন।
৫। ধ্বন্যাত্মক অব্যয় বা অনুকার অব্যয় : ধ্বনির অনুকরণে যেসব অব্যয় শব্দ গঠিত হয়েছে সেগুলো ধ্বন্যাত্মক অব্যয় বা অনুকার অব্যয়। যেমন— কনকনে শীতে ঠক ঠক করে কাপে। ফুটফুটে জ্যোৎস্নায় মাঠে গিজ গিজ করছে লোক।
৬। নিত্যসম্বন্ধী অব্যয় : যে অব্যয়গুলো পরস্পর অপেক্ষিত হয়ে বাক্যে ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে নিত্যসম্বন্ধী অব্যয় বলে। যেমন — ‘যথা ধর্ম তথা জয়।’ ‘যত হাসি তত কান্না।’
৭। পদান্বয়ী অব্যয় : যে অব্যয় পদ কোনো পদের পরে ব্যবহৃত হয়ে ওই পদের সঙ্গে অন্য পদের সম্বন্ধ স্থাপন করে, তাকে পদান্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন — ‘দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে?’
৮। প্রশ্নসূচক অব্যয় : যে অব্যয় দ্বারা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়, তাকে প্রশ্নসূচক অব্যয় বলে। যেমন- কি করবেন? কোথায় যাবেন?
৯। বাক্যালংকার অব্যয় : যে অব্যয় অর্থহীনভাবে ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের শোভা বর্ধন করে, তাকে বাক্যালংকার অব্যয় বলে। যেমন— হায় রে কপাল! আমি ত কাল আসি নি।
১০। সংযোজক অব্যয় : যে অব্যয় দুটি পদ বা বাক্যকে সংযুক্ত করে, তাকে সংযোজক অব্যয় বলে। যেমন— সে, তুমি ও আমি যাব। আরও কিছু কথা ছিল বাকি।
১১। সমুচ্চয়ী অব্যয় বা সম্বন্ধবাচক অব্যয় : একটি বাক্যের সঙ্গে অন্য একটি বাক্যের অথবা একটি পদের সঙ্গে অন্য একটি পদের যে অব্যয় সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায়, তাকে, সমুচ্চয়ী বা সম্মন্ধবাচক অব্যয় বলে। যেমন- তুমি অথবা তোমার ভাই এ কাজ করেছে।
১২। উপসর্গ : যে সকল বর্ণ ধাতু বা শব্দের পূর্বে বসে নতুন শব্দ সৃষ্টি করে তাদের উপসর্গ বলে। যেমন— তোমার অত্যাচারের সীমা পরিসীমা নেই।
১৩। তৎসম উপসর্গ : অতি, অনু, অধি, অপ, অপি, অব, অভি, আ, উৎ, উপ, দূর্, নি, নির্, প্র, প্রতি, পরা, পরি, বি, সম্, সু– এই কুড়িটি তৎসম অব্যয় ধাতু ও শব্দের পূর্বে বসে নতুন শব্দ সৃষ্টি করে বলে তাদের তৎসম উপসর্গ বলে। যেমন– ‘দুর্গম গিরি, কান্তার মরু দুস্তর পারাবার হে।