প্রতিবছর বাংলাদেশ নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়। বিশ্ব জুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এসব দুর্যোগ দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে। খরা এসব দুর্যোগের অন্যতম। খরা দীর্ঘকালীন শুষ্ক আবহাওয়া ও অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্টি হয়। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম (বরেন্দ্রভূমি) অঞ্চলে খরার ঘনঘন প্রাদুর্ভাব ওই এলাকার একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বরেন্দ্রভূমি বলয়ের মধ্যে রয়েছে নাটোর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, দিনাজপুর ও রংপুর জেলা।
অনুশীলনী প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১. দুর্যোগের দুটি প্রাকৃতিক কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর : দুর্যোগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক কারণ হলো–
i. প্রাকৃতিক বা ভৌগোলিক অবস্থান এবং ii. জলবায়ুর পরিবর্তন।
প্রশ্ন-২. দুর্যোগের দুটি মানবসৃষ্ট কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর : মানবসৃষ্ট দুর্যোগের দুটি কারণ হলো–
i. শিল্প কারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া;
ii. গাছপালা কেটে ফেলা।
প্রশ্ন-৩. বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের তিনটি কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর : জলবায়ু পরিবর্তনের তিনটি কারণ হলো–
i. নদী দূষণ;
ii. শিল্প কারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া;
iii. গাছপালা কেটে ফেলা।
প্রশ্ন-৪. বাংলাদেশের কোন অঞ্চলগুলোতে নদীভাঙনের প্রবণতা রয়েছে? কেন?
উত্তর : বাংলাদেশ নদ-নদীর দেশ হওয়ায় এদেশের অনেক জায়গাতেই নদীভাঙনের প্রবণতা দেখা যায়। এদেশের প্রধান নদী পদ্মা, যমুনা ও মেঘনাসহ ৭৫টি নদীতে নিয়মিত নদীভাঙন ঘটে থাকে। যমুনা, মেঘনা ও পদ্মা নদী তীরের ভাঙন সর্বাধিক এবং এ নদীগুলোর ক্রমাগত ভাঙনে সিরাজগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলা শহর দুটি বিপদাপন্ন। এ অঞ্চলগুলোতে বন্যার ফলে নদী তীরবর্তী এলাকা ভাঙনের শিকার হয়। নদীতে পানির প্রবাহ বেড়ে গেলে নদী দ্রুতবেগে ছুটে চলে এবং প্রশস্ত আঁকাবাঁকা নদীতে বেশি ভাঙন ঘটে।
প্রশ্ন-৫. বাংলাদেশের কোন অঞ্চলগুলোতে খরা বেশি হয়?
উত্তর : দীর্ঘসময় বৃষ্টি না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে যে অবস্থা তাকে খরা বলে। আমাদের দেশের কোনো কোনো অঞ্চল খরার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত সংঘটিত হয়। তাছাড়া এসব অঞ্চলে অল্পসংখ্যক নদী থাকার কারণে খরার প্রবণতা বেশি। দীর্ঘকাল ধরে শুষ্ক আবহাওয়া ও অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে সেখানে খরা হয়।
প্রশ্ন-৬. বাংলাদেশের কোন অঞ্চলগুলো ভূমিকম্পপ্রবণ?
উত্তর : ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশে ভূমিকম্পের নিশ্চিত ঝুঁকি রয়েছে। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল অধিক ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল তুলনামূলক কম ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। বাংলাদেশের পূর্বাংশে রয়েছে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় এবং এ পাহাড়গুলো বেলেপাথর, সেলপাথর এবং কর্দম দ্বারা গঠিত। গঠনগত কারণে এ অঞ্চলে ভূমিকম্পের প্রবণতা বেশি।