চাষার দুক্ষু (রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন) প্রবন্ধ প্রশ্ন ও উত্তর

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কত সালে জন্মগ্রহণ করেছেন?

উত্তর : রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন-২। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের প্রকৃত নাম কি?

উত্তর : রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের প্রকৃত নাম রোকেয়া খাতুন।

প্রশ্ন-৩। ‘মতিচূর’ গ্রন্থটির রচয়িতা কে?

উত্তর : ‘মতিচূর’ গ্রন্থটির রচয়িতা রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।

প্রশ্ন-৪। ‘পাছায় জোটে না ত্যানা’— ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে কাদের সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : ‘পাছায় জোটে না ত্যানা’- ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে আমাদের দেশের কৃষকদের সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন-৫। ‘চাষার দুক্ষু ‘ প্রবন্ধটির রচয়িতা কে?

উত্তর : ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধটির রচয়িতা রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।

প্রশ্ন-৬। ‘চাষার দুক্ষু’ রচনাটি কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?

উত্তর : ‘চাষার দুক্ষু’ রচনাটি ‘রোকেয়া রচনাবলি’ থেকে সংকলিত হয়েছে।

প্রশ্ন-৭। ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে কোন কবির কথা উল্লেখ রয়েছে?

উত্তর : ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা উল্লেখ রয়েছে।

প্রশ্ন-৮। আমাদের সমাজের মেরুদণ্ড কারা?

উত্তর : চাষারা আমাদের সমাজের মেরুদণ্ড।

প্রশ্ন-৯। কোন মহাযুদ্ধ সমস্ত পৃথিবীকে সর্বস্বান্ত করেছে?

উত্তর : ইউরোপের মহাযুদ্ধ সমস্ত পৃথিবীকে সর্বস্বান্ত করেছে।

প্রশ্ন-১০। ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে উল্লেখিত সমুদ্র তীরবর্তী গ্রাম কোনটি?

উত্তর : ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে উল্লেখিত সমুদ্র তীরবর্তী গ্রাম সাত ভায়া।

প্রশ্ন-১১। ‘অনুকরণপ্রিয়তা’ নামক ভূতটি কাদের কাঁধে চেপেছে?

উত্তর : ‘অনুকরণপ্রিয়তা’ নামক ভূতটি কৃষকদের কাঁধে চেপেছে।

প্রশ্ন-১২। সভ্যতা বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে কোন শিল্পসমূহ ক্রমশ বিলুপ্ত হয়েছে?

উত্তর : সভ্যতা বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় শিল্পসমূহ ক্রমশ বিলুপ্ত হয়েছে।

প্রশ্ন-১৩। লেখিকার মতে, কোন দিক থেকে আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশ ও জাতির সমকক্ষ হতে চলেছি?

উত্তর : লেখিকার মতে, শিক্ষা ও সম্পদের দিক থেকে আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশ ও জাতির সমকক্ষ হতে চলেছি।

প্রশ্ন-১৪। ‘চাষাই সমাজের মেরুদণ্ড’— উক্তিটি কার?

উত্তর : ‘চাষাই সমাজের মেরুদণ্ড’— উক্তিটি বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের।

প্রশ্ন-১৫। কৃষককন্যা জমিরনের মাথায় তেল দেওয়ার জন্যে কোথায় নিয়ে যাওয়া হতো?

উত্তর : কৃষককন্যা জমিরনের মাথায় তেল দেওয়ার জন্যে রাজবাড়ি নিয়ে যাওয়া হতো।

প্রশ্ন-১৬। রাতের বেলায় শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে কৃষকেরা কী করত?

উত্তর : রাতের বেলায় শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে কৃষকেরা পাট, খড় জ্বালিয়ে আগুন পোহাত।

প্রশ্ন-১৭। কোন জেলায় রেশম চাষ হয়?

উত্তর : আসাম ও রংপুর জেলায় রেশম চাষ হয়।

প্রশ্ন-১৮। কোন ধরনের কাপড় বেশ গরম এবং দীর্ঘকাল স্থায়ী হয়?

উত্তর : এন্ডি কাপড় বেশ গরম এবং দীর্ঘকাল স্থায়ী হয়।

প্রশ্ন-১৯। টেকো কি?

উত্তর : টেকো হচ্ছে ‘সুতা পাকাবার যন্ত্র’।

প্রশ্ন-২০। ‘পখাল ভাত’ অর্থ কি?

উত্তর : ‘পখাল ভাত’ অর্থ- পান্তা ভাত।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্ন-২১। দুই সের খেসারির বিনিময়ে আসাম অঞ্চলের কৃষকরা কী বিক্রি করত?
উত্তর : দুই সের খেসারির বিনিময়ে আসাম অঞ্চলের কৃষকরা পত্নী-কন্যাকে বিক্রি করত।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১। দেশি শিল্পসমূহ ক্রমশ বিলুপ্ত হচ্ছে কেন?
উত্তর : সভ্যতার নামে অন্যকে অনুকরণ করা ও বিলাসিতার কারণে দেশি শিল্পসমূহ ক্রমশ বিলুপ্ত হচ্ছে।
আধুনিক সভ্যতার বিকাশে যন্ত্রশিল্পের বহুমুখী ব্যবহারের ফলে আমাদের দেশের কুটির শিল্পসমূহ ক্রমশ বিলুপ্তির পথে। সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং পাশ্চাত্য সভ্যতার প্রতি অনুকরণপ্রিয়তা দেশীয় শিল্পসমূহ বিলুপ্তির অন্যতম কারণ। কলকারখানায় উৎপাদিত বিচিত্র বর্ণের জুট ফ্লানেলের মোহে আমরা স্বদেশে উৎপাদিত এন্ডি কাপড় ত্যাগ করেছি। এসব কারণেই আমাদের দেশীয় শিল্পসমূহ ক্রমশ বিলুপ্তির পথে।
প্রশ্ন-২। সেকালে রমণীরা হেসেখেলে বস্ত্র-সমস্যা পূরণ করত কীভাবে?
উত্তর : এন্ডি কাপড় ব্যবহার ও নিজেদের কাপড় নিজেরা প্রস্তুত করার মাধ্যমে সেকালে রমণীরা হেসেখেলে বস্ত্র-সমস্যা পূরণ করত।
সেকালে রমণীরা নিজ হাতে এন্ডি নামক এক প্রকার রেশম থেকে সুতা তৈরি করে তা দিয়ে কাপড় প্রস্তুত করত। তারা কারো বাড়িতে দেখা করতে যাওয়ার সময় টেকো হাতে সুতা কাটতে কাটতে যেত। গল্প করার ফাঁকে ফাঁকে তাদের বস্ত্র তৈরি করা হতো। একটি এন্ডি কাপড় প্রায় চল্লিশ বছর পর্যন্ত টেকসই হতো। এভাবেই সেকালে রমণীরা হেসেখেলে নিজেদের বস্ত্র-সমস্যা পূরণ করত।
প্রশ্ন-৩। ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে বর্ণিত রংপুর জেলার কৃষকরা বিচালি শয্যায় শয়ন করতেন কেন?
উত্তর : ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে বর্ণিত রংপুর জেলার কৃষকরা শীত থেকে বাঁচার জন্যে বিচালি শয্যায় শয়ন করতেন।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রংপুর জেলাকে বঙ্গদেশের সকল জেলার প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। কৃষকরাই অন্নবস্ত্রের জোগানদাতা হলেও তারাই ছিলেন সবচেয়ে বঞ্ছিত। টাকায় ২৫ সের চাল পাওয়া গেলেও তাদের অন্ন বস্ত্র জুটত না। শীতকালে দিনের বেলায় তারা রোদ পোহাতেন আর রাত্রে পাটখড়ির আগুন থেকে উত্তাপ নিতেন। বিচালি শয্যায় শয়ন করতেন।
প্রশ্ন-৪। ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে বর্ণিত সমুদ্র-তীরবর্তী গ্রামের লোকেরা সমুদ্রজলে চাল ধুয়ে ভাত রাধত কেন?
উত্তর : ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে বর্ণিত সমুদ্র তীরবর্তী গ্রামের লোকেরা ভাতের সঙ্গে লবণ জোটাতে না পারার কারণে সমুদ্রজলে চাল ধুয়ে ভাত রাঁধত।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন তৎকালীন সাত ভায়া নামক সমুদ্র-তীরবর্তী গ্রামের কৃষকদের দুরবস্থার চিত্র তুলে ধরেছেন। পখাল বা পান্তাভাতের সঙ্গে তারা লবণও জোটাতে পারত না। কারণ লবণ ক্রয়ের সামর্থ্য তাদের ছিল না। আর এ কারণেই তারা সমুদ্রজলে চাল ধুয়ে ভাত রাঁধত।
প্রশ্ন-৫। টাকায় ২৫ সের চাল পাওয়া সত্ত্বেও রংপুর জেলার কৃষকদের জীবনযাপন কেমন ছিল?
উত্তর : টাকায় ২৫ সের চাল পাওয়া সত্ত্বেও রংপুর জেলার কৃষকদের জীবনযাপন মানবেতর ছিল।
এক সময় রংপুর জেলায় টাকায় ২৫ সের চাল পাওয়া যেত। সভ্যতার বিরূপ প্রভাবের ফলে তখনো রংপুর জেলার কৃষকদের জীবন ছিল দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত। নিদারুণ অভাবে তারা ভাতের পরিবর্তে লাউ, কুমড়া প্রভৃতি তরকারি ও পাটশাক, লাউশাক ইত্যাদি সিদ্ধ করে খেত। বহু কষ্টে নারীদের পরিধানের কাপড় সংগ্রহের পর পুরুষরা কৌপীন ধারণ করে কোনোমতে লজ্জা নিবারণ করত।
প্রশ্ন-৬। ‘বাঙালি সভ্য থেকে সভ্যতর হচ্ছে’– প্রাবন্ধিকের এ মন্তব্যের কারণ কী? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : বাঙালির চিন্তা-চেতনার প্রসার ও প্রযুক্তির উৎকর্ষ দেখে প্রাবন্ধিক এ মন্তব্য করেছেন।
ভারতবর্ষের ইতিহাস সুদীর্ঘকালের; সময়ের সাথে সেই ইতিহাসের পালাবদল ঘটেছে সর্বান্তকরণে। প্রাবন্ধিক মনে করেন মাত্র দেড়শ বছর আগেও ভারতবর্ষের মানুষ সভ্যতাকে পুরোপুরি আয়ত্ত করতে পারেনি। কিন্তু পরবর্তীকালে চিন্তা-চেতনা ও প্রযুক্তির উৎকর্ষের কারণে বাঙালি সভ্য থেকে সভ্যতর হয়েছে।