প্রশ্ন-১. মরিচা কী? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : বিশুদ্ধ লোহা জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিতে বায়ুর অক্সিজেনের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে লোহার অক্সাইড নামক সম্পূর্ণ নতুন পদার্থে পরিণত হয়, যা মরিচা নামে পরিচিত। মরিচার ধর্ম লোহা, অক্সিজেন ও পানি হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
প্রশ্ন-২. সতর্কীকরণ প্রতীক বা হ্যাজার্ড সিম্বল কাকে বলে?
উত্তর : একটি রাসায়নিক পদার্থ কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা বোঝানোর জন্য যে সুনির্দিষ্ট প্রতীক ব্যবহার করা হয়, তাকে সতর্কীকরণ প্রতীক বা হ্যাজার্ড সিম্বল বলে।
প্রশ্ন-৩. প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রধান উপাদান কি?
উত্তর : প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রধান উপাদান হলো মিথেন।
প্রশ্ন-৪. অ্যালকোহল, অ্যারোসল প্রভৃতি কী ধরনের পদার্থ?
উত্তর : অ্যালকোহল, অ্যারোসল প্রভৃতি দাহ্য পদার্থ।
প্রশ্ন-৫. দহন কাকে বলে?
উত্তর : বায়ুর অক্সিজেনের সাথে কোনো কিছুর বিক্রিয়াকে দহন বলে।
প্রশ্ন-৬. তেজস্ক্রিয় পদার্থ কাকে বলে?
উত্তর : যে সকল পদার্থ থেকে তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হয় তাদেরকে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বলে।
প্রশ্ন-৭. অনুসন্ধান কাজের প্রথম শর্ত কী?
উত্তর : অনুসন্ধান কাজের প্রথম শর্ত হলো বিষয়বস্তু নির্ধারণ।
প্রশ্ন-৮. আকরিক থেকে কী ধরনের মৌল আহরণ করা হয়?
উত্তর : আকরিক থেকে ধাতব ও অধাতব মৌল আহরণ করা হয়।
প্রশ্ন-৯. কোন ধরনের পদার্থ সাধারণত বিক্রিয়া করে তাপ উৎপন্ন করে?
উত্তর : সাধারণত দাহ্য পদার্থ বিক্রিয়া করে তাপ উৎপন্ন করে।
প্রশ্ন-১০. সর্বপ্রথম স্বর্ণ আহরণ করে কারা?
উত্তর : মিশরীয়রা সর্বপ্রথম স্বর্ণ আহরণ করে।
প্রশ্ন-১১. খাদ্য কাকে বলে?
উত্তর : যেসব জৈব উপাদান জীবের দেহ গঠন, ক্ষয়পূরণ এবং শক্তি উৎপাদনে ব্যবৃহত হয় সেগুলোকে খাদ্য বলে।
প্রশ্ন-১২. সমস্ত প্রাণিকূলের খাদ্যের উৎস কী?
উত্তর : সমস্ত প্রাণিকূলের খাদ্যের উৎস হলো উদ্ভিদ।
প্রশ্ন-১৩. ফুড প্রিজারভেটিভস কী?
উত্তর : নির্দিষ্ট মাত্রায় ব্যবহৃত খাদ্যের পচন রোধক রাসায়নিক পদার্থসমূহকে ফুড প্রিজারভেটিভস বলে।
প্রশ্ন-১৪. জৈব পারঅক্সাইড, পটাসিয়াম ক্লোরেট, বারুদ প্রভৃতি সাবধানে নাড়াচাড়া করতে হয় কেন?
উত্তর : জৈব পারঅক্সাইড, পটাসিয়াম ক্লোরেট, বারুদ প্রভৃতি বিস্ফোরক পদার্থ। এগুলো অত্যন্ত সংবেদনশী। এসব রাসায়নিক উপাদান নিজে নিজেই অথবা সামান্য চাপজনিত কারণে বিস্ফোরিত হতে পারে; যা অনেক সময় মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটায়। তাই এ পদার্থগুলোকে খুব সাবধানে নাড়াচাড়া করতে হয়।
প্রশ্ন-১৫. রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের নির্ভরশীলতা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : জীবের দেহ বিভিন্ন জটিল রাসায়নিক অণু যেমন চর্বি, প্রোটিন, ক্যালসিয়ামের যৌগ, DNA প্রভৃতি দ্বারা গঠিত। জীবের জন্ম ও বৃদ্ধি, উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি প্রভৃতি জীব রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়। তাই বলা যায়, জীববিজ্ঞান ও রসায়ন পরস্পর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন-১৬. রাসায়নিক পরীক্ষাগারে মাস্ক ব্যবহার প্রয়োজন কেন?
উত্তর : রাসায়নিক পরীক্ষাগারে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে। অনেক ক্ষেত্রে এগুলো থেকে বিষাক্ত ও মারাত্মক ক্ষতিকর গ্যাস নির্গত হয়। এসব গ্যাসের প্রভাবে চোখে পানি আসা, মাথা ব্যথা করা, বমি আসা, শ্বাসকষ্ট হওয়া এমনকি কেউ জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারে। মাস্ক ব্যবহার করলে এসব দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা একেবারে কমে যায়।
প্রশ্ন-১৭. মোম দ্বারা আগুন জ্বালানো রাসায়নিক পরিবর্তন—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : মোম হলো কার্বনঘটিত যৌগ। এটি কার্বন ও হাইড্রোজেন দ্বারা গঠিত। মোম দ্বারা আগুন জ্বালালে মোমের দহন ঘটে। এতে কার্বন-ডাইঅক্সাইড ও জলীয়বাষ্প উৎপন্ন হয়। মোম থেকে কার্বন-ডাইঅক্সাইড ও জলীয়বাষ্পের ধর্ম সম্পূর্ণ আলাদা। তাই মোমের দহন রাসায়নিক পরিবর্তন।
প্রশ্ন-১৮. বিদ্যুৎ উৎপাদনে রসায়নের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : জারণ প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন বর্জিত হয় ও বিজারণ প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন গৃহীত হয়। অপরদিকে আমরা জানি, ইলেকট্রনের প্রবাহ মানে বিদ্যুৎ প্রবাহ। এই জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়া রসায়নের জ্ঞান দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব। তাই বলা যায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে রসায়নের ভূমিকা রয়েছে।
প্রশ্ন-১৯. সাদা কাগজে কালো কালির লেখাতে রসায়ন কোথায়?
উত্তর : সাদা, কালো ইত্যাদি রং সংক্রান্ত জ্ঞান হচ্ছে রসায়ন। কাগজ, কালি বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগের সমন্বয়ে গঠিত যা শিল্প-কারখানায় বিভিন্ন পদার্থের রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। কাজেই সাদা কাগজে কালো কালির লেখা সর্বত্রই আছে রসায়ন।
প্রশ্ন-২০. গবেষণা কার্যক্রমে পরীক্ষণ ও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : রসায়নে অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রক্রিয়ার অনেক ক্ষেত্রেই পরীক্ষণ নির্ভর। পরীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেই বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করা যায়। পরীক্ষণ কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজন হয় প্রয়োজনীয় রাসায়নিক ও অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহ, পরীক্ষণের ফলে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত (Data) সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা প্রদান এবং ফলাফল নিশ্চিতকরণ।
প্রশ্ন-২১. যে কারণে বিভিন্ন বস্তু বিকৃত হয়ে যায়, সেটি থেকে সতর্কতার জন্য কোন চিহ্ন ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : তীব্র মাত্রার তেজস্ক্রিয়তার কারণে বিভিন্ন বস্তু বিকৃত হয়ে যায়। যেমন- হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে তেজস্ক্রিয় নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণের কারণে, অনেক তৈজসপত্র বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। এটি থেকে সতর্কতার জন্য তেজস্ক্রিয় দ্রব্যের পাত্র বা কন্টেইনারে ট্রিফয়েল চিহ্ন ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন-২২. রসায়নে অনুসন্ধান বা গবেষণা প্রক্রিয়া- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : মানবজাতির কল্যাণসাধন করাই হলো বিজ্ঞানের মূল লক্ষ্য। উপযুক্ত উপায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কোনো কিছু খুঁজে বের করাই হলো গবেষণা। রসায়নের ক্ষেত্রেও গবেষণা র নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে।
গবেষণার জন্য প্রথম কাজ হচ্ছে বিষয়বস্তু নির্ধারন করা। এরপর এই বিষয়ে বা এর সমমানের কোনো বিষয়ে যেসব গবেষণা পূর্বে হয়েছ অথবা কোনো বই প্রকাশিত হয়েছে তা থেকে বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। এসব গবেষণাপত্র হতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান ও প্রণালী নির্ধারণ করতে হবে। এর মাধ্যমে পরীক্ষণ সম্পন্ন করে তা হতে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণের কাজ করতে হবে। উপরিউক্ত সকল কাজ সম্পন্ন হলে ফলাফল বের করে তা নিয়ে প্রাসঙ্গিক মন্তব্য করতে হবে।