চতুর্থ অধ্যায় : নিউটনিয়ান বলবিদ্যা, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্র
প্রশ্ন-১. বলবিদ্যা কি? (What is mechanics?)
উত্তর : বলবিদ্যা হচ্ছে বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যা বস্তুর আচরণ, বল প্রয়োগে বস্তুর পরিবর্তিত ধর্ম নিয়ে আলোচনা করে। বলবিদ্যার যে শাখায় গতিশীল বস্তুর ওপর ক্রিয়ারত বলগুলির বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে গতিবিদ্যা বলে। তত্ত্ব ও তথ্যগত পার্থক্যের জন্য একে সৃতিবিজ্ঞান (Kinematics) ও বল গতিবিজ্ঞান (Kinetics) এ দুইটি শাখায় ভাগ করা হয়।
প্রশ্ন-২. কোনো বস্তুর ত্বরণ কোনটির সমানুপাতিক?
উত্তর : কোনো বস্তুর ত্বরণ বস্তুর ওপর প্রযুক্ত নিট বলের সমানুপাতিক।
প্রশ্ন-৩. কীরূপ গতিবেগের জন্য নিউটনের গতিসূত্রসমূহ প্রযোজ্য নয়?
উত্তর : অতি উচ্চ মানের (আলোর বেগের কাছাকাছি) বেগসমূহের জন্য নিউটনের গতির সূত্রসমূহ প্রযোজ্য নয়।
প্রশ্ন-৪. বলের চারটি বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তর : বলের চারটি বৈশিষ্ট্য হলো:
i. বলের দিক আছে।
ii. বল জোড়ায় জোড়ায় ক্রিয়া করে।
iii. কোনো বল একটি বস্তুতে ত্বরণ সৃষ্টি করতে পারে।
iv. বল কোনো বস্তুকে বিকৃত করতে পারে।
প্রশ্ন-৫. টর্ক কাকে বলে? (What is torque?)
উত্তর : যা কোন অঘূর্ণনশীল বস্তুতে ঘুর্ণন সৃষ্টি করে বা ঘুর্ণায়মান বস্তুর কৌণিক বেগের পরিবর্তন করে তাকে টর্ক বলে।
প্রশ্ন-৬. পূর্ণ স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ কী?
উত্তর : যে সংঘর্ষের আগে ও পরে দুটি বস্তুর গতিশক্তির সমষ্টি অপরিবর্তিত থাকে সেই সংঘর্ষকে পূর্ণ স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ বলে।
প্রশ্ন-৭. ঘাত বল কাকে বলে?
উত্তর : খুব অল্প সময়ের জন্য খুব বড় মানের যে বল কোন বস্তুর উপর প্রযুক্ত হয় তাকে ঘাত বল বলে।
প্রশ্ন-৮. কেন্দ্রমুখী বলের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর : যখন কোনো বস্তু একটি বৃত্তাকার পথে ঘুরতে থাকে তখন ঐ বৃত্তের কেন্দ্র অভিমুখে যে নিট বল ক্রিয়া করে বস্তুটিকে বৃত্তাকার পথে গতিশীল রাখে তাকে কেন্দ্রমুখী বল বলে।
প্রশ্ন-৯. অস্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ কাকে বলে?
উত্তর : দুটি বস্তুর মধ্যে সংঘর্ষ হলে যদি বস্তুগুলোর মোট গতিশক্তি সংরক্ষিত না হয় তাহলে সেই সংঘর্ষকে অস্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ বলে।
প্রশ্ন-১০. বল ধ্রুবক কাকে বলে?
উত্তর : কোনো স্প্রিংয়ের দৈর্ঘ্য একক পরিমান বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ বল প্রয়োগ করতে হয় তাকে স্প্রিংয়ের বল ধ্রুবক বলে।
প্রশ্ন-১১. একমাত্রিক সংঘর্ষ কী?
উত্তর : সংঘাতাধীন বস্তু দুটির আপেক্ষিক গতিবেগ সংঘর্ষের আগে ও পরে একই সরল রেখা বরাবর হলে, ঐ সংঘাতকে একমাত্রিক সংঘর্ষ বলে।
প্রশ্ন-১২. ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র লিখ।
উত্তর : যখন কোনো ব্যবস্থার ওপর প্রযুক্ত নিট বাহ্যিক বল শূন্য হয়, তখন ব্যবস্থাটির মোট ভরবেগ সংরক্ষিত থাকে।
প্রশ্ন-১৩. সংঘর্ষ কাকে বলে?
উত্তর : অতি অল্প সময়ের জন্য বৃহৎ কোনো বল ক্রিয়া করে বস্তুর গতির হঠাৎ ও ব্যাপক পরিবর্তন করাকে সংঘাত বা সংঘর্ষ বলে।
প্রশ্ন-১৪. মৌলিক বল কী?
উত্তর : যে সকল বল মূল বা অকৃত্রিম অর্থাৎ অন্য কোনো বল থেকে উৎপন্ন হয় না বরং অন্যান্য বল কোনো না কোনো ভাবে এ সকল বলের প্রকাশ তাকে মৌলিক বল বলে।
প্রশ্ন-১৫. কৌণিক ভরবেগ কাকে বলে?
উত্তর : ঘূর্ণায়মান বস্তুর ঘূর্ণন অক্ষের সাপেক্ষে ঘূর্ণন জড়তা ও কৌণিক বেগের গুণফলকে ঐ অক্ষের সাপেক্ষে ঘূর্ণায়মান বস্তুর কৌণিক ভরবেগ বলে।
প্রশ্ন-১৬. প্রত্যয়নী বল কাকে বলে?
উত্তর : স্প্রিং বা সরল দোলক এর সাম্যাবস্থান হতে সরে গেলে যে বল বস্তুটিকে পুনরায় এর সাম্যাবস্থানে ফিরিয়ে আনার প্রয়াস পায় তাকে প্রত্যয়নী বল বলে।
প্রশ্ন-১৭. 1 পাউন্ডাল বল এর সংজ্ঞা কি?
উত্তর : এক পাউন্ড ভরের কোনো বস্তুর ওপর এক ফুট/সেকেন্ড২ ত্বরণ সৃষ্টি করতে যে বল প্রযুক্ত হয় তাকে এক পাউন্ডাল বল বলা হয়।
প্রশ্ন-১৮. রাস্তায় ব্যাংকিং-এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : আমরা জানি, বৃত্তাকার পথে কোনো বস্তু ঘুরতে কেন্দ্রমুখী বলের প্রয়োজন। বাঁকা রাস্তায় গাড়ির গতিও বৃত্তাকার। তাই বাঁকা রাস্তায় গাড়ি ঘোরানোর সময় কেন্দ্রমুখী বলের প্রয়োজন হয়। এ কেন্দ্রমুখী বল সৃষ্টি করার জন্য বাঁকা রাস্তার ভিতরের দিক অপেক্ষা বাইরের দিক কিছুটা উঁচু করে তৈরি করা হয়। একে রাস্তার ব্যাংকিং বলে। বাঁকা রাস্তায় ব্যাংকিং থাকে বলে গাড়ি মোড় ঘোরার সময় কেন্দ্রর দিকে কিছুটা হেলে পড়ে যাতে প্রয়োজনীয় কেন্দ্রমুখী বল সৃষ্টি করতে পারে।