ভরবেগ কি রাশি? কেন?
উত্তরঃ ভরবেগ একটি ভেক্টর রাশি। কারণ বেগ ভেক্টর রাশি বলে ভরবেগও ভেক্টর রাশি। এর দিক বেগের দিকে।
ঘাত বল কাকে বলে?
উত্তরঃ খুব অল্প সময়ের জন্য যে বল প্রযুক্ত হয় তাকে ঘাত বল বলে। ক্রিকেট ব্যাট ও বলের সংঘর্ষ ঘাত বলের বাস্তব উদাহরণ। কেননা ব্যাট দ্বারা বলের উপর বল খুব অল্প সময়ের জন্য প্রযুক্ত হয়। খুব অল্প সময় ধরে ক্রিকেট ব্যাট বলটির সংস্পর্শে থাকে, সে সময়ে ব্যাট কর্তৃক প্রযুক্ত বল অনেক বড় হয়। ক্রিকেট ব্যাট কর্তৃক প্রযুক্ত এরূপ বলকে ঘাত বল বলা হয়।
অভিকর্ষ বা মাধ্যাকর্ষণ কাকে বলে?
উত্তরঃ পৃথিবী এবং অন্য একটি বস্তু বা বস্তুকণার মধ্যকার আকর্ষণ বলকে অভিকর্ষ বা মাধ্যাকর্ষণ বলে।
পূর্ণ স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ কাকে বলে?
উত্তর : যে সংঘর্ষের আগে ও পরে দুটি বস্তুর আপেক্ষিক বেগ অপরিবর্তিত থাকে সেই সংঘর্ষকে পূর্ণ স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ বলে।
মহাকর্ষীয় ধ্রুবক কাকে বলে?
উত্তরঃ দুইটি একক ভরের বস্তুকে পরস্পর থেকে একক দূরত্বে স্থাপন করলে তারা পরস্পরকে যে বল দ্বারা আকর্ষণ করে তাকে মহাকর্ষীয় ধ্রুবক বলে।
নিউটনের তৃতীয় সূত্রটি লিখ।
উত্তরঃ বলের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রকৃতিতে বল জোড়ায় জোড়ায় ক্রিয়া করে। যখনই কোনো বস্তুর উপর একটি বল প্রযুক্ত হয়, তখনই একটি সমমানের এবং বিপরীতমুখী বল অন্য একটি বস্তুর উপর ক্রিয়া করে। এই বিষয়টিকে সাধারণত এভাবে বলা হয়-
প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।
এটি নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র হিসেবে পরিচিত।
ঘর্ষণ কী?
উত্তরঃ দুটি বস্তু পরস্পর সংস্পর্শে থাকলে তাদের স্পর্শ তলে গতির বিরুদ্ধে যে বাধার সৃষ্টি হয়, তাকে ঘর্ষণ বলে।
নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে কীভাবে জড়তা ও বলের ধারণা পাওয়া যায়?
উত্তরঃ নিউটনের প্রথম সূত্রে বলা হয়েছে, বল প্রয়োগ না করলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির ও গতিশীল বস্তু সমবেগে সরলপথে চলতে থাকবে। বস্তুর এই ধর্মকেই জড়তা বলে এবং যে কারণে এর গতীয় অবস্থা পরিবর্তন ঘটায়, সেটিই হচ্ছে বল। তাই প্রথম সূত্র থেকে জড়তা ও বলের সংজ্ঞা পাওয়া যায়।
সাম্য বল কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো বস্তুর ওপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি বলের লব্ধি শূন্য হয় অর্থাৎ বস্তুর কোনো ত্বরণ না হয়, তখন বস্তুটি সাম্যাবস্থায় থাকে। যে বলগুলো এই সাম্যাবস্থা সৃষ্টি করে তাদেরকে সাম্য বল বলে।
চলন্ত বাস হঠাৎ ব্রেক করলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ চলন্ত বাস হঠাৎ ব্রেক করলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন গতি জড়তার কারণে।
ব্যাখ্যা : চলন্ত অবস্থায় বাসের সাথে যাত্রীও একই গতি প্রাপ্ত হয়। কিন্তু বাস হঠাৎ থেমে গেলে বাসের সাথে সাথে যাত্রীর শরীরের নিচের অংশ স্থির হয় কিন্তু শরীরের উপরের অংশ জড়তার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যায়। ফলে যাত্রী সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন।
ঘর্ষণ বল কেন উৎপন্ন হয়?
উত্তরঃ ঘর্ষণ হলো যেকোনো দু’টি তলের অনিয়মিত প্রকৃতির ফল। প্রত্যেক বস্তুরই মসৃণ অথবা অমসৃণ দুই প্রকার তল থাকতে পারে। আপাতদৃষ্টিতে কোনো বস্তুর তলকে মসৃণ বলে মনে হলেও এ তলগুলো মসৃণ নয়। এর ওপর অনেক উঁচু নিচু খাঁজ আছে। যখন একটি বস্তু অন্য একটি বস্তুর ওপর দিয়ে গতিশীল হয়, তখন উভয় বস্তুর স্পর্শতলের এ খাঁজগুলো একটির ভেতর আরেকটি ঢুকে খাঁজগুলো পরস্পরের সাথে আটকে যায়। যার ফলে একটি তলের ওপর দিয়ে অপর তলের গতি বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ঘর্ষণ বলের সৃষ্টি হয়।
ঘর্ষণ একটি প্রয়োজনীয় উপদ্রব- ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ একটি বস্তু যখন অন্য কোনো বস্তুর সংস্পর্শে থেকে একের উপর দিয়ে অপরটি চলতে চেষ্টা করে তখন বস্তুদ্বয়ের স্পর্শতলে গতির বিরুদ্ধে একটি বাধার উৎপত্তি হয়, তাকে ঘর্ষণ বল বলে।
ঘর্ষণ না থাকলে কোনো বস্তুর গতিই আর শেষ হতো না। বিরামহীনভাবে চলতে থাকতো। ঘর্ষণের কারণেই আমরা মাটিতে চলাচল করতে পারি। প্রয়োজন অনুযায়ী গাড়ির গতির দিক পরিবর্তন করতে পারি। বাতাসের ঘর্ষণ আছে বলেই প্যারাস্যুট দিয়ে সহজে মাটিতে নামা সম্ভব হয়েছে। আবার ঘর্ষণের ফলে শক্তির অপচয় হয়, অতিরিক্ত জ্বালানির খরচ হয়। তবুও ঘর্ষণ আমাদের অনেক উপকারে আসে। তাই ঘর্ষণ একটি প্রয়োজনীয় উপদ্রব।
বৈদ্যুতিক পাখার সুইচ বন্ধ করার সাথে সাথে থেমে যায় না কেন?
উত্তরঃ বৈদ্যুতিক পাখার সুইচ বন্ধ করার সাথে সাথে থেমে যায় না কারণ গতি জড়তার কারণে একটি গতিশীল বস্তু গতিশীলই থাকতে চায়। একটি বৈদ্যুতিক পাখার সুইচ বন্ধ করার পর ফ্যানটি গতি জড়তার কারণেই সাথে সাথে থেমে যায় না। বরং কিছুক্ষণ ঘোরে ধীরে ধীরে থেমে যায়।
দেখাও যে, ঘর্ষণ বল অসংরক্ষণশীল।
উত্তরঃ ঘর্ষণ বল সর্বদা গতির বিরুদ্ধে ক্রিয়া করে। তাই একটি পূর্ণ চক্রের প্রতিটি অংশে ঘর্ষণ বল দ্বারা কৃতকাজ ঋণাত্মক। ফলে একটি পূর্ণ চক্রে ঘর্ষণ বল দ্বারা কৃতকাজ কখনই শূন্য হতে পারে না। আবার ঘর্ষণ বলের ক্ষেত্রে দুটি নির্দিষ্ট বিন্দুর মধ্যে সম্পন্ন কাজের পরিমাণ গতিপথের উপর নির্ভর করে। তাই ঘর্ষণ বল একটি অসংরক্ষণশীল বল।
আমাদের জুতার নিচে খাঁজ কাটা রাখা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ আমাদের জুতার নিচে খাঁজ কাটা রাখা হয় কারণ ঘর্ষণ বল বৃদ্ধি করার জন্য। এক্ষেত্রে জুতার খাঁজ কাটাগুলো মাটিকে শক্ত করে আকড়ে ধরে রাখে ফলে আমরা পিছলিয়ে পড়ি না।
কাঁচে গুলি করলে ছিদ্র হয় কিন্তু ঢিল ছুড়লে কাচ চূর্ণবিচূর্ণ হয়– ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ঘাত বলের তারতম্যের কারণে কাঁচে গুলি করলে ছিদ্র হয় কিন্তু ঢিল ছুড়লে কাঁচ চূর্ণ বিচুর্ণ হয়। খুব কম সময়ের জন্য ঘাত বল প্রযুক্ত হয়। কাঁচে গুলি করলে গুলি কর্তৃক প্রযুক্ত বল F, কাঁচের ভরবেগ পরিবর্তন করে। যে সময় ধরে কাঁচ গুলির সংস্পর্শে থাকে সে সময়ে গুলি কর্তৃক প্রযুক্ত বল অন্যান্য বলের তুলনায় অনেক বড় হয় এবং গুলিটি কাঁচ ছিদ্র করে বের হয়ে যায়। কিন্তু ঢিল এর ভরবেগ এবং ক্রিয়াকাল বেশি হওয়ায় কাঁচে প্রযুক্ত বল চারদিকে ছড়িয়ে গিয়ে কাঁচকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে।