প্রশ্ন- কোষ কাকে বলে?
উত্তরঃ জীবের জৈবিক কার্যাবলী সুষ্ঠভাবে সম্পাদনের জন্য সূক্ষ্ম পর্দা দিয়ে আবৃত জীবদেহের গঠন ও কাজের একককে কোষ বলে। নিউক্লিয়াসের সংগঠনের ভিত্তিতে কোষ দুই ধরনের যথা : আদি কোষ ও প্রকৃত কোষ।
প্রশ্ন- প্রোটোপ্লাজম কাকে বলে?
উত্তরঃ কোষের ভেতরে যে অর্ধস্বচ্ছ, থকথকে জেলির ন্যায় জটিল সজীব বস্তু থাকে তাকে প্রোটোপ্লাজম বলে।
প্রশ্ন- কোষ ঝিল্লী কী?
উত্তরঃ প্রোটোপ্লাজমের বাইরে যে দ্বিস্তরবিশিষ্ট পর্দা থাকে তাকে কোষঝিল্লী বা প্লাজমালেমা বলে। এটি একটি স্থিতিস্থাপক পর্দা। কোষঝিল্লির ভাঁজকে মাইক্রোভিলাস বলে। এটি প্রধানত লিপিড এবং প্রোটিন দিয়ে তৈরি।
কাজ: অভিস্রবণের মাধ্যমে পানি ও খনিজ লবণ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে এবং পাশাপাশি কোষগুলোকে পরস্পর থেকে আলাদা করে রাখে।
প্রশ্ন- সাইটোপ্লাজম কী?
উত্তরঃ প্রোটোপ্লাজম থেকে নিউক্লিয়াস সরিয়ে দিলে যে জেলি সদৃশ বস্তুটি থেকে যায় সেটিই সাইটোপ্লাজম।
প্রশ্ন- প্লাস্টিড কী?
উত্তরঃ প্লাস্টিড উদ্ভিদ কোষের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গাণু। এর প্রধান কাজ খাদ্য প্রস্তুত করা, খাদ্য সঞ্চয় করা ও উদ্ভিদ দেহকে বর্ণময় ও আকর্ষণীয় করে পরাগায়ণে সাহায্য করা।
প্রশ্ন- ক্লোরোপ্লাস্ট কী?
উত্তরঃ সবুজ রঙের প্লাস্টিডকে ক্লোরোপ্লাস্ট বলে। পাতা, কচি কান্ড ও অন্যান্য সবুজ অংশে এদের পাওয়া যায়। প্লাস্টিডে ক্লোরোফিল থাকে তাই এদের সবুজ দেখায়। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করা এর প্রধান কাজ।
প্রশ্ন- রাইবোসোম কাকে বলে?
উত্তরঃ সাইটোপ্লাজমে মুক্ত অবস্থায় বিরাজমান যে দানাদার কণায় প্রোটিন সংশ্লেষণ ঘটে তাকে রাইবোসোম বলে।
প্রশ্ন- লাইসোসোম কী?
উত্তরঃ সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত যে অঙ্গাণু হাইড্রোলাইটিক এনজাইমের আধার হিসেবে কাজ করে তাই লাইসোজোম। লাইসোসোম জীব কোষকে ফ্যাগোসাইটিস প্রক্রিয়ায় জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে এবং এর উৎসেচক আগত জীবাণুগুলোকে হজম করে ফেলে।
প্রশ্ন- টিস্যুতত্ত্ব কাকে বলে?
উত্তরঃ টিস্যু নিয়ে আলোচনাকে টিস্যুতত্ত্ব বা Histology বলে।
প্রশ্ন- কোষের শক্তিঘর কাকে বলে?
উত্তরঃ কোষ অঙ্গাণু মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের শক্তিঘর বলে।
প্রশ্ন- অণুবীক্ষণ যন্ত্র কাকে বলে?
উত্তরঃ যে যন্ত্রের সাহায্যে ক্ষুদ্র বস্তু বড় করে দেখা যায় তাকে অণুবীক্ষণ যন্ত্র বলে। এ যন্ত্র দুই ধরনের। যথা : সরল অণুবীক্ষণ যন্ত্র ও জটিল অণুবীক্ষণ যন্ত্র।
কোষকে ক্ষুদ্র রাসায়নিক কারখানা বলা হয় কেন?
উত্তরঃ কোষ হচ্ছে জীবদেহের যাবতীয় কাজের, যেমন- শ্বসন, পুষ্টি, রেচন, বৃদ্ধি, বংশবিস্তার প্রভৃতির আধার। কোষের ভেতর রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে প্রতিটি জীবের শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্য যে শক্তির দরকার তা তৈরি হয়। এ কারণেই কোষকে একটি ক্ষুদ্র রাসায়নিক কারখানা বলা হয়।
প্রশ্ন- টিস্যু ও অঙ্গের মধ্যে সম্পর্ক লিখ।
উত্তরঃ উৎপত্তিগত দিক থেকে এক এবং একই রকম কাজ করে এমন সম বা অসম আকৃতির কোষের সমষ্টিকে টিস্যু বলে।
অপরদিকে যখন কয়েক ধরনের টিস্যু এক সাথে একটি সাধারণ কাজ করে সেই টিস্যু সমষ্টিকে অঙ্গ বলে।
প্রশ্ন- অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির গুরুত্ব কী?
উত্তরঃ উন্নত প্রাণীর ক্ষেত্রে স্নায়ুতন্ত্র এবং অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিতন্ত্র সম্মিলিতভাবে সকল অঙ্গের অর্থাৎ সকল তন্ত্রের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে দেহকে সচল ও কার্যক্ষম রাখে।
প্রশ্ন- অঙ্গ ও অন্ত্র বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ এক বা একাধিক টিস্যুর সমন্বয়ে গঠিত এবং নির্দিষ্ট কার্য সম্পাদনে সক্ষম প্রাণিদেহের অংশবিশেষকে অঙ্গ (Organ) বলে। আবার পরিপাক, শ্বসন, রেচন, প্রজনন ইত্যাদি শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রাণিদেহে কতগুলো অঙ্গের সমন্বয়ে বিভিন্ন তন্ত্র গঠিত হয়।
প্রশ্ন- রক্তের কাজ কী?
উত্তরঃ রক্তের কাজগুলো হলো:
- রক্ত সারা দেহে পানি ও তাপের সমতা রক্ষা করে।
- লোহিত কণিকার দ্বারা ফুসফুস থেকে কোষে কোষে অক্সিজেন পরিবহন করে।
- রক্তের শ্বেতকণিকা রোগজীবাণু ধ্বংস করে দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।
- রক্তরসের মাধ্যমে কার্বন ডাইঅক্সাইড, দেহের বর্জ্য পদার্থ, খাদ্যরস, হরমোন ইত্যাদি দেহের বিভিন্ন অংশে পরিবহন করে। কেটে গেলে রক্তপাত বন্ধে সহায়তা করে।
উত্তরঃ আদিকোষ এবং প্রকৃত কোষের মধ্যে পার্থক্য নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- আদি কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না, প্রকৃত কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে।
- প্রকৃত কোষের নিউক্লিয়াসে সুতার ন্যায় ক্রোমােসােম থাকলেও আদি কোষের নিউক্লিয়াসে ক্রোমােসােমের পরিবর্তে ক্রোমাটিন থাকে।
- আদি কোষে রাইবােজোম ব্যতীত অন্য কোনাে অঙ্গাণু সাইটোপ্লাজমে থাকে না, প্রকৃত কোষে মাইটোকন্ড্রিয়াসহ অন্যান্য অঙ্গণু সাইটোপ্লাজমে থাকে।
- আদি কোষ অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়, প্রকৃত কোষ মাইটোসিস ও মিয়ােসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়।