দ্বিতীয় অধ্যায় : শরিয়তের উৎস, নবম-দশম শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্ন-১। সূরা আত-তীন কোথায় অবতীর্ণ হয়েছে?

 

উত্তরঃ সূরা আত-তীন মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।

 

প্রশ্ন-২। শরিয়তের তৃতীয় উৎস কী?

 

উত্তরঃ শরিয়তের তৃতীয় উৎস ইজমা (ঐকমত্য)।

 

প্রশ্ন-৩। ‘ওয়াজিব’ শব্দের অর্থ কি?

 

উত্তরঃ ‘ওয়াজিব’ শব্দের অর্থ হলো অবশ্য পালনীয়।

 

প্রশ্ন-৪। ‘তিলাওয়াত’ শব্দের অর্থ কি?

 

উত্তরঃ ‘তিলাওয়াত’ শব্দের অর্থ পাঠ করা, আবৃত্তি করা ইত্যাদি।

 

প্রশ্ন-৫। হাদিস অর্থ কি?

 

উত্তরঃ হাদিস অর্থ কথা বা বাণী।

 

প্রশ্ন-৬। আবৃত্তি করার আরবি প্রতিশব্দ কি?

 

উত্তরঃ আবৃত্তি করার আরবি প্রতিশব্দ হচ্ছে তিলাওয়াত।

 

প্রশ্ন-৭। শরিয়ত কাকে বলে?

 

উত্তরঃ ইসলামি আইন-কানুন বা বিধি-বিধানকে একত্রে শরিয়ত বলে।

 

প্রশ্ন-৮। শানে নুযুল কাকে বলে?

 

উত্তরঃ আল-কুরআনের সূরা বা আয়াত নাজিলের কারণ বা পটভূমিকে ‘শানে নুযুল’ বলে।

 

প্রশ্ন-৯। কাতিবে ওহি কী?

 

উত্তরঃ আল-কুরআন লিপিবদ্ধকারী সাহাবিদেরকে কাতিবে ওহি বা ওহি লেখক বলা হয়।

 

প্রশ্ন-১০। মুবাহ কাকে বলে?

 

উত্তরঃ যেসব কাজ করলে কোনোরূপ সওয়াব নেই, আবার না করলে গুনাহও হয় না, এরূপ কাজকে মুবাহ বলে।

 

প্রশ্ন-১১। ইজমা কি?

 

উত্তরঃ ইজমা হলো শরিয়তের তৃতীয় উৎস। ইজমা আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ- একমত হওয়া, ঐক্যবদ্ধ হওয়া, মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করা ইত্যাদি। ব্যবহারিক অর্থে কোনো বিষয় বা কথায় ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলে।

 

প্রশ্ন-১২। ইসলামি শরিয়তের দ্বিতীয় উৎসটি বুঝিয়ে লেখো।

 

উত্তরঃ ইসলামি শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস হলো সুন্নাহ।

 

সুন্নাহ অর্থ রীতিনীতি। মূলত মহানবি (স) এর বাণী, কর্ম ও তাঁর সমর্থিত রীতিনীতিকে সুন্নাহ বলে। সুন্নাহকে হাদিস নামেও অভিহিত করা হয়। হাদিস হলো আল-কুরআনের ব্যাখ্যাস্বরূপ। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বিভিন্ন বিষয়ের সংক্ষিপ্ত মূলনীতি বর্ণনা করেছেন। আর মহানবি (স) তাঁর হাদিসের মাধ্যমে এসব বিধি-বিধানের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্ন-১৩। কর্মবিমুখতা পরিত্যাজ্য কেন? ব্যাখ্যা করো।

 

উত্তরঃ কর্মবিমুখতা বলতে কাজ না করার ইচ্ছাকে বোঝায়।

 

কর্মবিমুখতা পরিত্যাজ্য কারণ— মানব জীবনে কাজের কোনো বিকল্প নেই। জীবনে বড় হওয়ার জন্য, জীবিকা উপার্জনের জন্য মানুষকে বহু কাজ করতে হয়। কাজ না করলে মানুষের জীবনে উন্নতি ও সফলতা আসে না। কর্মবিমুখতা মানুষের মধ্যে অলসতা সৃষ্টি করে। এতে মানুষ অকর্মণ্য হয়ে পড়ে। মানুষের কর্মস্পৃহা, কর্মক্ষমতা লোপ পায়। এজন্য কর্মবিমুখতা পরিত্যাজ্য।

 

প্রশ্ন-১৪। কুরআন তিলাওয়াত উত্তম ইবাদাত কেন?

 

উত্তরঃ কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারে। এজন্য কুরআন তিলাওয়াত উত্তম ইবাদত।

 

কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে মানুষের অন্তর পরিশুদ্ধ হয়। এ প্রসঙ্গে মহানবি (স) ইরশাদ করেন, “আমার উম্মতের উত্তম ইবাদত হলো- কুরআন তিলাওয়াত। যথাযথভাবে কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করতে পারে। এজন্যই কুরআন তিলাওয়াত উত্তম ইবাদত।

 

প্রশ্ন-১৫। নাযিরা তিলাওয়াত বলতে কী বোঝায়?

 

উত্তরঃ নাযিরা তিলাওয়াত বলতে দেখে দেখে কুরআন পড়াকে বোঝায়।

 

আল-কুরআন মহান আল্লাহর পবিত্র বাণী। কুরআন মজিদ শিখতে হলে প্রথমে দেখে দেখে তা পাঠ করতে হয়। অতঃপর হরকত, নুকতা, হরফ ইত্যাদি চিনে তাজবিদ (সুস্পষ্ট, ধীর-স্থির) সহকারে পাঠ করতে হয়। কুরআন মজিদ মুখস্ত পড়া যায়, আবার দেখেও তিলাওয়াত করা যায়। আর দেখে দেখে কুরআন পড়াকে নাযিরা তিলাওয়াত বলা হয়।

 

প্রশ্ন-১৬। সূরা আদ-দুহার শানে নুযুল লেখো।

 

উত্তরঃ রাসুল (স)-এর কাছে কয়েকদিন ওহি না আসা এবং এ প্রেক্ষিতে কাফির-মুশরিকদের ঠাট্টা-বিদ্রুপের জবাবে সূরা আদ-দুহা নাজিল হয়।

 

হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, একবার রাসুল (স) অসুস্থ থাকার কারণে দুই তিন রাত তাহাজ্জুদের নামায আদায় করতে পারেননি। এ সময় জিবরাইল (আ) আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর কাছে ওহি নিয়ে আসেননি। এতে মক্কার কাফির-মুশরিকরা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে বলতে থাকে যে, মুহাম্মদের (স) প্রতিপালক তাঁকে পরিত্যাগ করেছে এবং তার প্রতি বিরূপ হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই সূরা আদ-দুহা অবতীর্ণ হয়।

 

প্রশ্ন-১৭। সূরা-কাদরের পরিচিতি বর্ণনা করো।

 

উত্তরঃ সূরা-কাদর আল কুরআনের ৯৭তম সূরা। এটি অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন একটি সূরা। মক্কা নগরীতে অবতীর্ণ হয় এ সূরা। এর আয়াত সংখ্যা পাঁচটি। এ সূরায় ‘লাইলাতুল কাদর’-এর ফযিলত বর্ণনা করা হয়েছে। এ সূরায় লাইলাতুল কাদর শব্দটি তিনবার এসেছে। কাদর শব্দ থেকে এ সূরার নাম রাখা হয় সূরা আল কাদর।

 

প্রশ্ন-১৮। তাকরিরি হাদিস কাকে বলে? ব্যাখ্যা করো।

 

উত্তরঃ তাকরিরি হাদিস বলতে রাসুল (স)-এর মৌন সম্মতিজ্ঞাপক হাদিসকে বোঝায়।

 

সাহাবিগণ মহানবি (স)-এর সম্মুখে শরিয়ত সম্পর্কিত কোনো কথা বলেছেন বা কোনো কাজ করেছেন আর রাসুলুল্লাহ (স) তার প্রতিবাদ করেননি বা নীরব থেকে এর প্রতি মৌন সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন এ ধরনের হাদিস হলো তাকরিরি হাদিস।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্ন-১৯। আমার উম্মতের উত্তম ইবাদাত হলো কুরআন তিলাওয়াত- হাদিসটির মর্মার্থ ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ কুরআন তিলাওয়াত বান্দার দুনিয়ার কল্যাণ এবং আখিরাতের সফলতা নিশ্চিত করে বিধায় এটি উত্তম ইবাদত।

আল-কুরআন মহান আল্লাহর পবিত্র বাণী। এটি মানুষের প্রতি আল্লাহ তায়ালার এক বিশেষ নিয়ামত। এটি তিলাওয়াতকারীর মর্যাদা সমুন্নত করে। আল-কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে বান্দা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্য লাভ করতে পারে। যথাযথভাবে কুরআন তিলাওয়াত করার মাধ্যমে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করতে পারে। আর এজন্যই রাসুল (স) বলেছেন- “আমার উম্মতের উত্তম ইবাদত হলো কুরআন তিলাওয়াত।’ (বায়হাকি)।