ষষ্ঠ শ্রেণি – বাংলা ১ম পত্র
সৃজনশীল প্রশ্ন-১ :
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
দিনের বেলা আকাশ সচরাচর থাকে নীল। আবার কখনো সাদা বা কালো মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। ভোরে বা সন্ধ্যায় আকাশে কোনো কোনো অংশে নামে রঙের বন্যা। কখনো বা সারা আকাশ ভেসে যায় লাল আলোয়। আকাশের নীল চাঁদোয়াটা গ্যাসে ভর্তি ফাঁকা জায়গা। সেখানে আছে গ্যাস, পানির কণা বা জলীয় বাষ্প ও ধূলিকণা।
ক. আব্দুল্লাহ আল-মুতী কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
খ. আকাশে বিভিন্ন সময় রং খেলা করে কেন?
গ. আকাশ নীল দেখার কারণগুলো বর্ণনা করো।
ঘ. ‘ভোরে বা সন্ধ্যায় আকাশে কোনো কোনো অংশে নামে রঙের বন্যা’—উদ্দীপক ও ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আব্দুল্লাহ আল-মুতী সিরাজগঞ্জ জেলার ফুলবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
খ. ঋতু ও সময়ের তারতম্যের জন্য আকাশের রং বদলায়। দিনের বেলায় আকাশের রং সাধারণত নীল দেখায়। আবার সন্ধ্যায় আকাশে লাল রং ছড়ায়। রাতের আকাশ কালো হয়। কারণ, সূর্য থেকে যে আলো আসে, তাকে পৃথিবীর ওপরে বিশাল বাতাসের স্তর পেরিয়ে আসতে হয়। আবার দুপুরবেলা এই আলো আসে লম্বভাবে হাওয়ার স্তর ফুঁড়ে। কিন্তু সকাল বা সন্ধ্যায় এই আলো আসে তির্যকভাবে হাওয়ার স্তর পেরিয়ে। ফলে তখন আলোকে দুপুরের তুলনায় অনেক বেশি হাওয়ার কণা ডিঙাতে হয়। সকালে বা সন্ধ্যায় মেঘ আর বাতাসের ধূলি-কণার ভেতর দিয়ে লম্বা পথ পেরিয়ে আসতে পারে শুধু লাল আলো। তখন আকাশ লাল দেখায়। মেঘলা আকাশে সূর্যের আলো মেঘকে ভেদ করে আসতে পারে না, তাই তখন আকাশ কালো দেখায়।
গ. আকাশ হচ্ছে গ্যাসে ভর্তি ফাঁকা জায়গা। আর এই গ্যাসগুলো বর্ণহীন, তথাপি আকাশ নীল দেখায়। আকাশের নীল চাঁদোয়াটা কঠিন কোনো জিনিসের তৈরি নয়।
বায়ুমণ্ডলে প্রায় ২০টি বর্ণহীন গ্যাস মিশে আছে। এই গ্যাসগুলোই বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এই গ্যাসের অণুগুলো বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে থাকার কারণেই মূলত আকাশ নীল দেখায়। রংধনু থেকে নীল আলো বায়ুমণ্ডলে বেশি বিক্ষেপিত হয় বলে আকাশ নীল দেখায়। আবার বলা হয় বিদ্যমান ২০টি গ্যাসের কণাগুলো খুব ছোট মাপের আলোর ঢেউ সহজে ঠিক করে ছিটিয়ে দিতে পারে। এই ছোট মাপের ঢেউগুলো দেখা যায় নীল হিসেবে।
সুতরাং বলা যায়, পৃথিবীর ওপর হাওয়ার স্তর আছে বলেই পৃথিবীতে আকাশ নীল দেখায়।
ঘ. উদ্দীপক এবং ‘আকাশ’ নামক প্রবন্ধে আকাশের রহস্যময়তা ফুটে উঠেছে। এই রহস্যময়তার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে।
আকাশের রং সব সময় এক রকম থাকে না। কখনো রং কালো, কখনো সাদা, কখনো লাল আবার কখনো নীল। পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলের জন্য আকাশের রং হুবহু এক রকম থাকে না। সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় আকাশের রং এক রকম থাকে না। কারণ, সূর্য থেকে যে আলো আসে, তাকে পৃথিবীর ওপরের বিশাল বাতাসের স্তর পেরিয়ে আসতে হয়। দুপুরবেলা এই আলো আসে সরাসরি অর্থাৎ প্রায় লম্বভাবে হাওয়ার স্তর ফুঁড়ে। কিন্তু সকালে বা সন্ধ্যায় মেঘ আর বাতাসের ধূলি-কণার ভেতর দিয়ে লম্বা পথ পেরিয়ে আসতে পারে শুধু সূর্যের লাল আলো, তাই তখন আকাশ লাল দেখায়।