রেচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্রতিটি জীব তার দেহে উৎপাদিত বর্জ্য পদার্থ বাইরে বের করে দেয় তাকে রেচন বলে। মূত্র ও CO2 ত্যাগ এক ধরনের রেচন প্রক্রিয়া।
রেচন অঙ্গ কী?
উত্তরঃ রেচন কাজে অংশগ্রহণকারী অঙ্গগুলোই হলো রেচন অঙ্গ।
বৃক্ক কি?
উত্তরঃ বৃক্ক হলো মানবদেহের প্রধান রেচন অঙ্গ।
নেফ্রন কী?
উত্তরঃ বৃক্কের গঠন ও কার্যগত একক হলো নেফ্রন।
বৃক্কে প্রবেশকারী ধমনির নাম কি?
উত্তরঃ বৃক্কে প্রবেশকারী ধমনির নাম হলো রেনাল ধমনি।
কী ধরনের খাবার গ্রহণের মূত্রের অম্লতা বৃদ্ধি পায়?
উত্তরঃ আমিষ জাতীয় খাবার গ্রহণে মূত্রের অম্লতা বৃদ্ধি পায়।
হাইলাস কী?
উত্তরঃ প্রতিটি বৃক্কের অবতল অংশের ভাঁজই হলো হাইলাস।
পেলভিস কি?
উত্তরঃ বৃক্কের অবতল অংশের ভাঁজ হাইলাসের গহ্বরই হলাে পেলভিস।
মেডুলা কী?
উত্তরঃ বৃক্কের ভেতরের গাঢ় কালচে রঙের অংশই হলো মেডুলা।
মূত্রের রং হালকা হলুদ হয় কোন পদার্থের উপস্থিতির কারণে?
উত্তরঃ ইউরোক্রোম নামক রঞ্জক পদার্থের উপস্থিতির কারণে মূত্রের রং হালকা হলুদ হয়।
মূত্রে কী উপাদান থাকে?
উত্তরঃ মূত্রের প্রায় ৯০ ভাগই পানি। এছাড়া অন্যান্য উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিনিন ও বিভিন্ন ধরনের লবণ।
ইউরোক্রোম কি?
উত্তরঃ ইউরোক্রোম এক ধরনের রঞ্জক পদার্থ যার উপস্থিতিতে মূত্রের রং হালকা হলুদ হয়।
হেনলির লুপ কি?
উত্তরঃ হেনলির লুপ হচ্ছে রেনাল টিউব্যুলের দ্বিতীয় অংশ যা নিম্নগামী বাহু এবং ঊর্ধ্বগামী বাহু এ দুটি অংশ নিয়ে গঠিত।
মালপিজিয়ান অঙ্গ কি?
উত্তরঃ মালপিজিয়ান অঙ্গ বা রেনাল করপাসল হল নেফ্রনের একটি অংশ। গ্লোমেরুলাস এবং বোম্যান্স ক্যাপসুল এ দুটি অংশ নিয়ে এটি গঠিত হয়।
রেনাল টিউব্যুল কী?
উত্তরঃ বৃক্কের বোম্যান্স ক্যাপসুলের অঙ্কীয়দেশ থেকে সংগ্রাহী নালি পর্যন্ত বিস্তৃত চওড়া নালিকাটিই রেনাল টিউব্যুল।
বৃক্ককে ছাঁকনযন্ত্র বলা হয় কেন?
উত্তরঃ বৃক্ক হলো দেহের প্রধান রেচন অঙ্গ। এ অঙ্গের মাধ্যমে মূত্রের দ্বারা ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, অ্যামোনিয়া, ক্রিয়েটিনিন প্রভৃতি নাইট্রোজেন ঘটিত বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশিত হয় এবং রক্ত পরিশোধিত হয়। এজন্যই বৃক্ককে ছাঁকনযন্ত্র বলা হয়।
রেনাল করপাসল কাকে বলে?
উত্তরঃ নেফ্রনের অগ্র প্রান্তকে রেনাল করপাসল বা মালপিজিয়ান করপাসল বা মালপিজিয়ান বডি বলে। এটি বৃক্কের কর্টেক্সে অবস্থিত এবং বোম্যানস ক্যাপসুল ও গ্লোমেরুলাস (Glomerulus) নিয়ে গঠিত।
ক্রিয়েটিনিন কি?
উত্তরঃ ক্রিয়েটিনিন হচ্ছে নাইট্রোজেন গঠিত বর্জ্য পদার্থ যা ক্রিয়েটিন ফসফেট ভেঙ্গে পেশিতে তৈরি হয় এবং যা মূত্র দিয়ে শরীর হতে বের হয়।
রেচন পদার্থ বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ রেচন পদার্থ বলতে মূলত নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থকে বোঝায়। শরীরের অতিরিক্ত পানি, লবণ, CO2, নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থ (ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, অ্যামোনিয়া, ক্রিয়েটিনিন) প্রভৃতি হলো রেচন পদার্থ। রেচন পদার্থ বিপাক প্রক্রিয়ার ফলে তৈরি হয় এবং রেচনতন্ত্রের মাধ্যমে দেহ থেকে বাইরে নিষ্ক্রান্ত হয়।
বৃক্কে পাথর হলে কী উপসর্গ দেখা দেয়?
উত্তরঃ বৃক্কে পাথর হলে নিম্নের উপসর্গগুলো দেখা দেয়- (ক) কোমরের পিছনে ব্যথা হয়; (খ) অনেকের প্রস্রাবের সাথে রক্ত বের হয়; (গ) অনেক সময় কাঁপুনী দিয়ে জ্বর আসে।
ডায়ালাইসিস কী?
উত্তরঃ বৃক্ক সম্পূর্ন অকেজো বা বিকল হওয়ার পর বৈজ্ঞানিক উপায়ে রক্ত পরিশোধিত করার নাম হলো ডায়ালাইসিস।
টিস্যু ম্যাচ বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ দু’জন মানুষের মধ্যে HLA নামক বিশেষ অ্যান্টিজেনের মিল থাকাকে টিস্যু ম্যাচ বলে। দু’জন মানুষের মধ্যে HLA এর মধ্যে মিল থাকলে তাদের একজনের কিডনি অন্যজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা যায়। অন্যথায় কিডনি সংযোজন সফল হয় না।
ডায়ালাইসিস ফ্লুইড বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ বৃক্ক সম্পূর্ণ বিকল হলে ডায়ালাইসিস করার সময় যে ডায়ালাইসিস মেশিন ব্যবহার করা হয় তাতে অবস্থিত টিউবটি একটি তরলে ডুবানো থাকে। এই তরলই হলো ডায়ালাইসিস ফ্লুইড। ডায়ালাইসিস ফ্লুইডের গঠন রক্তের প্লাজমার অনুরূপ হয়।
বৃক্কের পাথর হবার কারণ কী?
উত্তরঃ বৃক্ক ছোট আকারের পাথর সৃষ্টিই বৃক্কের পাথর হিসেবে পরিচিত। অতিরিক্ত শারীরিক ওজন, বৃক্কে সংক্রমণ রোগ, কম পানি পান করা এবং অতিরিক্ত আমিষ গ্রহণ করার কারণে বৃক্কে পাথর হয়ে থাকে। বৃক্কে পাথর হলে কোমরের পিছনে ব্যথা অনুভূত হয়।
হেনলির লুপ বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ নেফ্রনের গঠন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, নিকটবর্তী প্যাঁচানো নালিকার শেষ প্রান্ত সোজা হয়ে বৃক্কের মেডুলা অঞ্চলে প্রবেশ করে এবং একটি U আকৃতির ফাঁস বা লুপ গঠন করে পুনরায় কর্টেক্স অঞ্চলে ফিরে আসে। আবিষ্কারক ফ্রেডরিখ হেনলির নামানুসারে একে হেনলির লুপ বলা হয়। এটি প্রকৃতপক্ষে রেনাল টিউব্যুলেরই একটি অংশ, যা পুনঃশোষণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
নিকট আত্মীয়কে কিডনি দান বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ যখন কোনো ব্যক্তির কিডনি বিকল বা অকেজো হয়ে পড়ে তখন কোন সুস্থ ব্যক্তির কিডনি তার দেহে প্রতিস্থাপন করা যায়। এভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে পিতামাতা, ভাইবোন ও নিকট আত্মীয়ের কিডনির টিস্যু ম্যাচ হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ফলে মানুষের দুইটি কিডনির মধ্যে একটি কিডনি স্বজনদের দেহে প্রতিস্থাপন করা যায় এবং নিজের দেহের একটি কিডনিকে সবসময় কার্যকর রাখা যায়। নিকট আত্মীয়কে কিডনি দান বলতে এ ঘটনাটিকেই বোঝায়।