প্রশ্ন-১। উৎপাদন উদ্দেশ্যকে বিবেচনা করে কৃষি খামারকে কত ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তরঃ উৎপাদন উদ্দেশ্যকে বিবেচনা করে কৃষি খামারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রশ্ন-২। কৃষির প্রধান উপখাত কয়টি?
উত্তরঃ কৃষির প্রধান উপখাত চারটি।
প্রশ্ন-৩। GDP তে কৃষির কোন উপখাতের অবদান বেশি?
উত্তরঃ GDP তে কৃষির শস্য ও শাকসবজি উপখাতের অবদান বেশি।
প্রশ্ন-৪। কৃষি জোত কী?
উত্তরঃ কৃষিকাজের জন্য কৃষকের অধীনে একটি অখণ্ড কৃষি জমিই হলো কৃষিজোত।
প্রশ্ন-৫। খাদ্যশস্য কী?
উত্তরঃ কৃষকগণ যে সকল ফসল সরাসরি খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য চাষাবাদ করে ঐ সকল ফসলকে খাদ্যশস্য বলে।
প্রশ্ন-৬। শস্য বহুমুখীকরণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ খামারে একটি মাত্র ফসলের পরিবর্তে একাধিক ফসল উৎপাদন করাকে বলা হয় শস্য বহুমুখীকরণ।
প্রশ্ন-৭। কৃষি বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ সাধারণ অর্থে আমরা বুঝি কৃষক যে কাজগুলো করে তাই হচ্ছে কৃষি।
কৃষি’ একটি ভূমি কেন্দ্রিক উৎপাদন ব্যবস্থা। কৃষি’ কথাটির কোনো সুস্পষ্ট সংজ্ঞা প্রদান করা খুব কঠিন। কৃষি এক ধরনের জেনেটিক শিল্প। এটি মানুষের আদিমতম পেশা ও মানব সভ্যতার প্রান্তকেন্দ্র। বস্তুত কৃষি শুধু একটি বৃত্তি নয়, এটি জীবনধারণের একটি পদ্ধতিও বটে। প্রায় আট হাজার বছর আগে কৃষি আবিষ্কৃত হয়। সর্বপ্রথম চাষাবাদ শুরু হয় তুরস্ক ও প্যালেস্টাইনে।
প্রশ্ন-৮। কৃষির ক্ষেত্রসমূহকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?
উত্তরঃ ভূমিকৰ্ষণ তথা চাষ ও বীজ বপণের মাধ্যমে ফসল উৎপাদনকে কৃষিকাজ বলে। কৃষি কাজে শুধু ফসল উৎপাদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বরং পশু পালন, শস্য উৎপাদন, হাঁস-মুরগি পালন, মৎস্য চাষ, সবকিছুতেই বিস্তৃত হয়েছে। তাই কৃষির ক্ষেত্রসমূহকে আমরা চার ভাগে ভাগ করতে পারি। যথা- ১, শস্য উৎপাদন, ২. মৎস্য চাষ, ৩. পশুপালন ও ৪. বনায়ন।
প্রশ্ন-৯। কৃষি খামার ও কৃষিজোত এর পার্থক্য লিখ।
উত্তরঃ কৃষক যে আয়তনের জমির ওপর কৃষিকাজ পরিচালনা করে তাকে কৃষিজোত বলে। অন্যদিকে, একজন কৃষক ফসল ফলানোর জন্য যে জমি ব্যবহার করে থাকে কৃষি খামার বলে।কৃষিজোতের নির্দিষ্ট কোনো আকার বা আয়তন নেই। এ রকম জোত বড়, মাঝারি কিংবা ক্ষুদ্র হতে পারে। কিন্তু কৃষি খামারের নির্দিষ্ট নামে ও আয়তন আছে। যেমন- মৎস্য খামার, পশুপালন খামার ইত্যাদি।
প্রশ্ন-১০। বাংলাদেশের কৃষি কী প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ বাংলাদেশের কৃষি প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। পর্যাপ্ত সেচব্যবস্থার অভাবে আমাদের দেশের কৃষকগণ চাষাবাদের জন্য বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে থাকে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে যদি সময়মতো বৃষ্টিপাত হয় তাহলে ভালো ফসল হয়, কিন্তু যদি সময়মতো বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে ভালো ফসল হয় না। ফলে দেখা যায় বাংলাদেশের কৃষিব্যবস্থা এখনও অনেকটাই প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন-১১। যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে। ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ বাংলাদেশে কৃষিপণ্যের বিপণন ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান ত্রুটি হলো অনুন্নত পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। কৃষিপণ্যের সুষ্ঠু বিপণনের জন্য তাই পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন অপরিহার্য। কৃষিপণ্য পরিবহণের জন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, নদীর নাব্য বৃদ্ধি ও রেলপথের সম্প্রসারণ করা দরকার। প্রতিটি জেলা শহরের সাথে গ্রাম অঞ্চলের সংযোগ স্থাপনের ব্যবস্থা করা। দ্রুত পচনশীল পণ্য পরিবহণের জন্য দ্রুতগামী যানবাহনের ব্যবস্থা করা। তাই বলা যায়, যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে।
প্রশ্ন-১২। উৎপাদন পদ্ধতি এবং ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষেত্রে জীবন নির্বাহী খামার এবং বাণিজ্যিক খামার কি একই? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ না, উৎপাদন পদ্ধতি এবং ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষেত্রে জীবননির্বাহী খামার এবং বাণিজ্যিক খামার একই নয়। কারণ জীবননির্বাহী খামারের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য সনাতন পদ্ধতিতে উৎপাদন করে, কিন্তু বাণিজ্যিক খামারে মুনাফার উদ্দেশ্যে আধুনিক ও লাভজনক পদ্ধতিতে উৎপাদন করা হয়।
আবার কৃষিপণ্য পচনশীল হওয়ায় বাণিজ্যিক খামারে ঝুঁকি বেশি, জীবন নির্বাহী খামারে ঝুঁকি কম।
প্রশ্ন-১৩। একই জমিতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন কি কল্যাণকর?
উত্তরঃ একই জমিতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন করার প্রক্রিয়া হলো শস্য বহুমুখীকরণ।
একই জমিতে একই ফসল বারবার ফলানোর ফলে জমির নির্দিষ্ট রাসায়নিক উপাদান নিঃশেষ হয়ে যায়। ফলে ঐ বিশেষ ফসলটির উৎপাদন হ্রাস পায়। শস্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে একই জমিতে একই ফসল না চাষ করে ভিন্ন ভিন্ন শস্য উৎপাদন করলে জমির উর্বরতা এবং ফসল উৎপাদন দুইটিই বৃদ্ধি পায়।