রসায়ন প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-২৯)

প্রশ্ন-১। জৈব জ্বালানি কাকে বলে?

উত্তরঃ জৈব উৎস (গাছ, মানুষ) মাটির নিচে দীর্ঘদিন চাপা থেকে বিভিন্ন দ্রব্যে পরিণত হয় (কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস)। এ ধরনের দ্রব্য বা দ্রব্যসৃষ্ট যে সকল পদার্থকে বায়ুর অক্সিজেনে দহন করলে প্রচুর তাপশক্তি পাওয়া যায় তাদেরকে জৈব জ্বালানি বলে।

 

প্রশ্ন-২। সাসপেনশন ও দ্রবণের মধ্যে পার্থক্য কি?

উত্তরঃ সাসপেনশন ও দ্রবণ এক জিনিস নয়। দ্রবণে পদার্থগুলাে দ্রাবক পদার্থে দ্রবীভত অবস্থায় থাকে, যেখানে দ্রবের কোনাে আলাদা অস্তিত্ব বুঝা যায় না। কিন্তু সাসপেনশন মিশ্রণে কঠিন কণার আলাদা অস্তিত্ব থাকে এবং অসমসত্ত্ব মিশ্রণ বলে কণাগুলাে আসলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর অধঃক্ষিপ্ত বা পতিত হয়।

 

প্রশ্ন-৩। চাক্রিক যৌগে কীভাবে জ্যামিতিক সমাণুতা সৃষ্টি হয়?

উত্তরঃ চাক্রিক যৌগে জ্যামিতিক সমাণুতা দেখা যায়। চাক্রিক যৌগের বেলায় অণুর ত্রিমাত্রিক কাঠামােতে অভিন্ন পরমাণু বা মূলকগুলাে এক পাশে থাকলে সিস্ এবং বিপরীত পাশে থাকলে ট্রান্স সমাণু গঠিত হয়। যেমন 1, 2-ডাই মিথাইল সাইক্লোপ্রােপেনের দুটি জ্যামিতিক সমাণু সম্ভব।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্ন-৪। অপরিশোধিত তেল কাকে বলে?

উত্তরঃ যে পেট্রোলিয়াম খনি থেকে সরাসরি পাওয়া যায় তাকে অপরিশোধিত তেল বলে।

 

প্রশ্ন-৫। ফুয়েল সেল কি

উত্তরঃ ফুয়েল সেল এক প্রকার তড়িৎ রাসায়নিক কোষ যেখানে জ্বালানির রাসায়নিক শক্তি তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।

 

প্রশ্ন-৬। সাবানায়ন কি?

উত্তরঃ সাবানায়ন হচ্ছে সাবান তৈরি করার প্রক্রিয়া। তৈল বা চর্বিকে NaOH দ্রবণ দ্বারা অথবা KOH দ্রবণ দ্বারা আর্দ্র বিশ্লেষণ করলে যথাক্রমে সোডিয়াম সাবান, পটাসিয়াম সাবান, গ্লিসারিন বা গ্লিসারল উৎপন্ন হয়, একে সাবানায়ন বলে।

 

প্রশ্ন-৭। অ্যামিন কাকে বলে?

উত্তরঃ অ্যামোনিয়ার এক বা একাধিক হাইড্রোজেন পরমাণু সমসংখ্যক অ্যালকাইল বা অ্যারাইল মূলক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হলে যেসব যৌগ উৎপন্ন হয়, তাদেরকে অ্যামিন বলে।

 

প্রশ্ন-৮। এনানসিওমার কাকে বলে?

উত্তরঃ যে আলোক সমাণুদ্বয় এক সমতলীয় আলোর তলকে একই আবর্তন কোণে পরস্পর বিপরীত দিকে আবর্তন করে এবং তাদের সমমোলার মিশ্রণের আবর্তন মাত্রা প্রশমিত হয়ে শূন্য হয়ে যায় তাদেরকে পরস্পরের এনানসিওমার বলে।

 

প্রশ্ন-৯। হেক্সামিন কি?

উত্তরঃ হেক্সামিন হল অ্যামোনিয়া ফরম্যালডিহাইড চাক্রিক পলিমার। ফরমালিন ও গাঢ় অ্যামোনিয়া দ্রবণকে উত্তপ্ত করলে সাদা বর্ণের দানাদার চাক্রিক যৌগ হেক্সামিন বা ইউরোট্রপিন উৎপন্ন হয়। এর রাসায়নিক নাম হেক্সামিথিলিন টেট্রাঅ্যামিন।

 

প্রশ্ন-১০। পাওয়ার অ্যালকোহল কাকে বলে?

উত্তরঃ অ্যালকোহল মিশ্রিত জ্বালানিকে পাওয়ার অ্যালকোহল বলে। প্রায় ২০%–৩০% ইথাইল অ্যালকোহলের সাথে পেট্রোল, ইথার, বেনজিন ইত্যাদি মিশিয়ে পাওয়ার অ্যালকোহল তৈরি করা হয়। এটি তরল জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

 

প্রশ্ন-১১। জৈব রসায়ন কাকে বলে?

উত্তরঃ কার্বন শিকল দ্বারা গঠিত বিভিন্ন যৌগের রসায়নকে জৈব রসায়ন বলে। অপর কথায় রসায়ন বিদ্যার যে শাখায় হাইড্রোকার্বন ও হাইড্রোকার্বনের বিভিন্ন জাতক সম্পর্কে আলােচনা করা হয় তাকে জৈব রসায়ন বলে।

 

প্রশ্ন-১২। বিটুমিন কি?

উত্তরঃ বিটুমিন কালো বা বাদামী বর্ণের বন্ধনী গুণ সম্পন্ন জৈব রাসায়নিক যৌগ বিশেষ, যা রাস্তা তৈরীতে ব্যবহার করা হয়।

 

প্রশ্ন-১৩। চাক্রিক জৈব যৌগ কাকে বলে?

উত্তরঃ যেসব জৈব যৌগে শুধু কার্বন পরমাণুসমূহ পরস্পর যুক্ত হয়ে অথবা কার্বনের সাথে অন্য মৌল যেমন অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, সালফার প্রভৃতির পরমাণু যুক্ত হয়ে চক্র গঠন করে তাদের চাক্রিক জৈব যৌগ বলে।

 

প্রশ্ন-১৪। টিংচার আয়োডিন কি?

উত্তরঃ টিংচার আয়োডিন হলো পটাশিয়াম অক্সাইড, অ্যালকোহল ও পানির সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্রবণ।

 

প্রশ্ন-১৫। আলোক সমাণু কাকে বলে?

উত্তরঃ যেসব জৈব যৌগের আণবিক সংকেত ও গাঠনিক সংকেত একই তাদের দুই বা ততোধিক ভিন্ন কনফিগারেশন যুক্ত ভিন্ন সমাণু সম্ভব। কিন্তু এদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম এক হওয়া সত্ত্বেও এক সমতলীয় আলোর প্রতি ভিন্ন আচরণ করে ঐসব যৌগের প্রতিক্রিয়াকে আলোক সমাণুতা বলে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্ন-১৬। টিএনটি, জৈব পারঅক্সাইড, নাইট্রোগ্লিসারিন কী ধরনের পদার্থ?
উত্তরঃ টিএনটি, জৈব পারঅক্সাইড, নাইট্রোগ্লিসারিন বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ।

প্রশ্ন-১৭। কপার অক্সাইড ক্ষার নয় কেন?
উত্তরঃ যে সকল পদার্থ এসিডকে প্রশমিত করে এর বৈশিষ্ট্যসূচক ধর্ম বিলুপ্ত করে তাই ক্ষারক। এ সকল ক্ষারকের যেগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয় তাহাই ক্ষার। কপার অক্সাইড শুধুমাত্র এসিডকে প্রশমিত করে ইহার বৈশিষ্ট্যসূচক ধর্ম বিলুপ্তি করে, কিন্তু ইহা পানিতে দ্রবীভূত হয় না। তাই কপার অক্সাইড ক্ষার নয়।

প্রশ্ন-১৮। অম্ল-ক্ষারক নির্দেশিক কি?
উত্তরঃ অম্ল-ক্ষারক টাইট্রেশনের সময় তুল্যতা বিন্দু নির্ণয়ের জন্য কিছু কিছু যৌগ ব্যবহৃত হয় যারা নিজেদের বর্ণ পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রশমনের শেষ বিন্দু নির্দেশ করে। এসব যৌগকে প্রশমন বা অম্ল-ক্ষারক নির্দেশিক বলা হয়। যেমন- লিটমাস, ফেনলফথ্যালিন, মিথাইল অরেঞ্জ ইত্যাদি অম্ল ক্ষারক নির্দেশক।

প্রশ্ন-১৯। কয়লা প্রধানত কত প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ কয়লা প্রধানত চার প্রকার। যথা– ১. পিট কয়লা; ২. লিগনাইট কয়লা; ৩. বিটুমিনাস কয়লা; ৪. এনথ্রাসাইট কয়লা।

প্রশ্ন-২০। কয়লা ব্যবহারের প্রধান সমস্যা কি?
উত্তরঃ কয়লা ব্যবহারের প্রধান সমস্যা হলো এতে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা অত্যাধিক বেশি ঘটে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করলে অসম্পূর্ণ দহনের ফলে প্রচুর বর্জ্য উৎপাদন হয়।