রসায়ন প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-২৫)

প্রশ্ন-১। বিয়োজন মাত্রা কাকে বলে?

উত্তরঃ একটি দ্রবণে উপস্থিত কোনো উপাদানের মোল সংখ্যার যে ভগ্নাংশ বিয়োজিত হয় তাকে ঐ উপাদানের বিয়োজন মাত্রা বলে।

 

প্রশ্ন-২। টাইট্রেশন কাকে বলে?

উত্তরঃ নির্দিষ্ট ঘনমাত্রার কোনো দ্রবণের সাথে অপর একটি অজানা ঘনমাত্রার দ্রবণের বিক্রিয়া ঘটিয়ে অজানা দ্রবণের ঘনমাত্রা নির্ণয় করার পদ্ধতিকে টাইট্রেশন বল। টাইট্রেশন প্রক্রিয়ায় একটি জানা ঘনমাত্রার প্রমাণ দ্রবণের সাহায্যে একটি অজানা দ্রবণের ঘনমাত্রা নির্ণয় করা হয়। এটি প্রকৃতপক্ষে আয়তনিক বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া।

 

প্রশ্ন-৩। নিষ্ক্রিয় লোহার বৈশিষ্ট্য কী কী?

উত্তরঃ নিষ্ক্রিয় লোহার বৈশিষ্ট্য হলোঃ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নিষ্ক্রিয় লোহা লঘু এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে না।

নিষ্ক্রিয় লোহা কপার সালফেট হতে কপারকে মুক্ত করে না।

প্রশ্ন-৪। পাল্প কাকে বলে?

উত্তরঃ উদ্ভিদ বা উদ্ভিজ্জ বস্তু থেকে আলাদা করা সেলুলোজকে পাল্প বা মণ্ড বলে।

 

প্রশ্ন-৫। CO2– কে গ্রিনহাউজ গ্যাস বলা হয় কেন?

উত্তরঃ বিভিন্ন উৎস থেকে CO2 গ্যাস বায়ুমণ্ডলে নির্গত হওয়ায় দিনে দিনে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওজনে ভারী হওয়ায় এটি ভূ-পৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকে। অন্যান্য গ্যাসের তুলনায় CO2 গ্যাস বেশি তাপধারণ করে। ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। CO2 গ্যাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনা গ্রিন হাউজ প্রভাব বলে পরিচিত। একজন্য CO2 কে গ্রিনহাউজ গ্যাস বলা হয়।

 

প্রশ্ন-৬। প্লাস্টিককে নন-বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থ বলা হয় কেন?

উত্তরঃ প্লাস্টিক দ্রব্যের অনেক সুবিধা থাকলেও এর কিছু অসুবিধাও আছে। অধিকাংশ প্রাকৃতিক উপাদান মাটির ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজিত হয় কিন্তু প্লাস্টিক দ্রব্য ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজিত হয় না এজন্য প্লাস্টিককে নন-বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থ বলা হয়।

 

প্রশ্ন-৭। তড়িৎ দক্ষতা কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ক্যাথোডে যে পরিমাণ মৌল জমা হয় এবং ফ্যারাডের সূত্র অনুসারে যে পরিমাণ মৌল জমা হওয়ার কথা এ দুয়ের অনুপাতকে তড়িৎ দক্ষতা বলে।

 

প্রশ্ন-৮। তড়িৎ রাসায়নিক সারণি গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উত্তরঃ তড়িৎ রাসায়নিক সারণি হলাে মৌলের সক্রিয়তার সিরিজ। অর্থাৎ একটি মৌল কত তীব্রভাবে বিক্রিয়ায় অংশ নেবে সে সম্পর্কে ধারণা এ তড়িৎ রাসায়নিক সারি থেকে পাই। ফলে একটি নির্দিষ্ট কাজের জন্য, কোনাে নির্দিষ্ট মৌল ব্যবহার করতে হবে তা আমরা সহজেই নির্ণয় করতে পারি। তাই ব্যবহারিক ক্ষেত্রে তড়িৎ রাসায়নিক সারণি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

প্রশ্ন-৯। সার্বজনীন নির্দেশক কি?

উত্তরঃ সার্বজনীন নির্দেশক হলো বিভিন্ন নির্দেশকের সংমিশ্রণে তৈরি বিশেষ নির্দেশক যা pH এর বিস্তৃত পরিসরে বিভিন্ন বর্ণ পরিবর্তনের মাধ্যমে যৌগের অম্লত্ব, ক্ষারত্ব বা নিরপেক্ষতা নির্দেশ করে।

 

প্রশ্ন-১০। কামরাঙা খেলে মুখে রুচি বাড়ে কেন?

উত্তরঃ কামরাঙা টক জাতীয় ফল। এতে এসিড থাকে এবং এটি একটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। কামরাঙায় বিদ্যমান এসিড খাবার ও দেহের pH মানের ভারসাম্য আনে এবং ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করে। ফলে কামরাঙা খেলে খাবারের রুচি বাড়ে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্ন-১১। EPT কী?

উত্তরঃ EPT (Effluent Treatment Plant) বা বর্জ্য বিশোধন প্ল্যান্ট হচ্ছে শিল্পজাত তরল বর্জ্যের বিশোধনকল্পে কতিপয় আনুক্রমিক ব্যবস্থাপনা যেখানে তরল বর্জ্যে বিদ্যমান ভাসমান কণা দ্রবীভূত ও অদ্রবীভূত জৈব পদার্থসহ বিভিন্ন অপদ্রব্য দূরীভূত করা হয়।

 

প্রশ্ন-১২। হেমোগ্লোবিন কি?

উত্তরঃ হেমোগ্লোবিন হচ্ছে একটা এনজাইম। এটি হেম নামক প্রস্থেটিক গ্রুপ যা প্রোটিনের পেপটাইড অংশের সাথে যুক্ত থাকে। এই গ্রুপটি ফুসফুস থেকে অক্সিজেন নিয়ে একটি অক্সিজেন-হেম জটিল যৌগ তৈরি করে।

 

প্রশ্ন-১৩। মোলারিটি তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল কেন?

উত্তরঃ নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় প্রতি লিটার দ্রবণে দ্রবীভূত দ্রবের গ্রাম আণবিক ভর বা মোল সংখ্যাকে ঐ দ্রবণের মোলারিটি বলা হয়। মোলারিটি গণনা করার সময় প্রথমে এক লিটার দ্রবণে কত গ্রাম দ্রব দ্রবীভূত আছে তা হিসাব করতে হয়। তাপমাত্রার পরিবর্তনে যেহেতু দ্রবণের আয়তন পরিবর্তন হয়, তাই তাপমাত্রার পরিবর্তনে দ্রবণের মোলারিটিরও পরিবর্তন ঘটে।

 

প্রশ্ন-১৪। লাফিং গ্যাস কাকে বলে?

উত্তরঃ নাইট্রাস অক্সাইডকে লাফিং গ্যাস (laughing gas) বলে। এর রাসায়নিক সংকেত N₂O. নাইট্রোজেনের এ অক্সাইড বর্ণহীন, অদাহ্য, মিষ্টি গন্ধ ও স্বাদযুক্ত। এ গ্যাস স্বল্প পরিমাণে গ্রহণ করলে হাসির উদ্রেক হয় বলে এরুপ নামকরণ করা হয়েছে। অস্ত্রোপাচার ও দন্ত্যচিকিৎসায় চেতনানাশক ও ব্যথা উপশমকারক হিসেবে এ গ্যাস ব্যবহৃত হয়। লাফিং গ্যাস অন্যতম প্রধান গ্রীন হাউস গ্যাস ও বায়ুদূষক।

 

প্রশ্ন-১৫। 5% (v/v) ইথানল বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ (v/v)% দ্রবণের ঘনমাত্রা প্রকাশের শতকরা একক। 5% (v/v) বলতে বোঝায় প্রতি 100 mL দ্রবণে 5 mL দ্রব দ্রবীভূত অবস্থায় আছে। সুতরাং 5% (v/v) ইথানল বলতে বোঝায় 100 mL দ্রবণে 5 mL বিশুদ্ধ ইথানল দ্রবীভূত আছে অথবা 95 mL পানি ও 5 mL বিশুদ্ধ ইথানলের মিশ্রণ বোঝায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্ন-১৬। ক্রোমাটোগ্রাফি কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বিশ্লেষণমূলক পদ্ধতিতে বিশেষ জৈব যৌগের দুই বা ততোধিক উপাদানের কোনো মিশ্রণকে একটি স্থির মাধ্যমে রেখে এবং অপর একটি সচল মাধ্যমকে উক্ত স্থির মাধ্যমের সংস্পর্শে প্রবাহিত করে মিশ্রণের উপাদানগুলোর অধিশোষণ মাত্রা কিংবা বণ্টন সহগের উপর ভিত্তি করে এদেরকে বিভিন্ন স্তরে পৃথক করা সম্ভব হয়, তাকে ক্রোমাটোগ্রাফি বলে।

প্রশ্ন-১৭। এন্টিঅক্সিডেন্ট পদার্থ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারে খাদ্যের অনাকাঙ্ক্ষিত জারণ ক্রিয়া রোধ হয় তাদেরকে এন্টিঅক্সিডেন্ট পদার্থ বলে।

প্রশ্ন-১৮। গ্লাস ইলেকট্রোড pH মিটার কাকে বলে?
উত্তরঃ একটি গ্লাস ইলেকট্রোড ও একটি প্রমাণ ক্যালোমেল ইলেকট্রোড (নির্দেশক ইলেকট্রোড) সমন্বয়ে কোষ গঠন করে এতে সূক্ষ্ম ভোল্টমিটার সংযোগ করা থাকে এবং রেকর্ডারে ভোল্ট এককের পরিবর্তে pH দেখানো হয় বলে তাকে গ্লাস ইলেকট্রোড pH মিটার বলে।

প্রশ্ন-১৯। থার্মোপ্লাস্টিক পলিমারকে কেন সহজে বর্ধিতকরণ, বাঁকানো ও গলানো এবং তাপ দেওয়া যায়?
উত্তরঃ থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার শিকলের কার্বনসমূহের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন গঠিত হয় কিন্তু পার্শ্ববর্তী শিকলসমূহের মধ্যে দুর্বল আকর্ষণ বল কাজ করে। এই শিকলগুলো একটি অপরটির উপর দিয়ে চলাচল করতে পারে। ফলে এ জাতীয় পলিমারকে সহজে সম্প্রসারিত, বাঁকানো ও তাপ প্রয়োগে গলানো যায়। যেমন– পলিথিন, PVC ইত্যাদি।

প্রশ্ন-২০। বেনজালডিহাইড কী কী কাজে ব্যবহৃত হয়?
উত্তরঃ বেনজালডিহাইডের ব্যবহার নিচে দেওয়া হলো–

  • রঞ্জক দ্রব্য প্রস্তুতিতে এবং সুগন্ধিরূপে খাদ্যদ্রব্য সুস্বাদুকরণের কাজে বেনজালডিহাইড ব্যবহৃত হয়।
  • সিনামিক এসিড, সিনাম্যালডিহাইড, বেনজোয়িল ক্লোরাইড প্রভৃতি প্রস্তুতিতে বেনজালডিহাইড ব্যবহৃত হয়।
  • স্যালিসাইল অ্যালডিহাইড সুগন্ধি পদার্থ এবং রঞ্জক দ্রব্যের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।