রসায়ন প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-১৪)

প্রশ্ন-১। খনিজ কাকে বলে?

উত্তরঃ মাটির উপরিভাগে বা মাটির তলদেশে যে সকল পদার্থ থেকে আমরা প্রয়ােজনীয় দ্রব্যাদি যেমন– বিভিন্ন প্রকার ধাতু বা অধাতু ইত্যাদি সংগ্রহ করে থাকি তাদেরকে খনিজ বলে।

 

প্রশ্ন-২। তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব বর্ণনা কর।

উত্তরঃ তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে বিভিন্ন ধরনের রশ্মি নির্গত হয়। এই পদার্থসমূহের কোনোটির সময়-কাল (life time) কম, কোনোটির বেশি। তেজস্ক্রিয়তা ক্যান্সার হওয়ার বিশেষ একটি কারণ। সঠিক মাত্রায় ব্যবহার না করলে তা কল্যাণকর না হয়ে অকল্যাণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

কেমোথেরাপিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার হয়। কেমোথেরাপির ফলে মাথার চুল পড়ে যায়, বমি বমি ভাব হয়। অনেক সময় আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে।

 

প্রশ্ন-৩। কনফিগারেশন কাকে বলে?

উত্তরঃ যৌগের অণুতে বিভিন্ন পরমাণু বা গ্রুপ এর এক একটি নির্দিষ্ট ত্রিমাত্রিক বিন্যাস অর্থাৎ স্টেরিও সমাণুর ত্রিমাত্রিক বিন্যাসকে কনফিগারেশন বলে।

 

 

প্রশ্ন-৪। প্যারাফিন কাকে বলে?

উত্তরঃ যেসব হাইড্রোকার্বনের অণুতে কার্বন পরমাণুসমূহ পরস্পর একক বন্ধন দ্বারা আবদ্ধ এবং কার্বনের অবশিষ্ট যোজনীগুলো হাইড্রোজেন পরমাণু দ্বারা পূর্ণ থাকে তাদেরকে প্যারাফিন বলে।

 

প্রশ্ন-৫। বাফার দ্রবণ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে দ্রবণে সামান্য পরিমাণে এসিড বা ক্ষার যোগ করলেও দ্রবণের মোট pH অপরিবর্তিত থাকে তাকে বাফার দ্রবণ বলে।

 

 

প্রশ্ন-৬। ভরক্রিয়া সূত্রটি লিখ।

উত্তরঃ ভরক্রিয়ার সূত্রটি হলো– নির্দিষ্ট তাপমাত্রায়, নির্দিষ্ট সময়ে যেকোনো বিক্রিয়ার হার ঐ সময়ে উপস্থিত বিক্রিয়কগুলোর সক্রিয় ভরের (অর্থাৎ মোলার ঘনমাত্রা বা আংশিক চাপের) সমানুপাতিক হয়।

 

প্রশ্ন-৭। ফটোকেমিক্যাল ধোঁয়া কিভাবে সৃষ্টি হয়?

উত্তরঃ জ্বালানির দহনের ফলে যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়ায় কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড ও অব্যবহৃত গ্যাসীয় জ্বালানি বায়ুতে মিশে সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে নানা ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ফটোকেমিক্যাল ধোঁয়া সৃষ্টি হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্ন-৮। ফেহলিং দ্রবণ কি?

উত্তরঃ সমআয়তন কপার সালফেট এর জলীয় দ্রবণ (হালকা নীল বর্ণ) এবং সমআয়তন সোডিয়াম পটাশিয়াম টারটারেট বা রচেলি সল্টের ক্ষারীয় (NaOH) দ্রবণ (বর্ণহীন) এর মিশ্রণকে (গাঢ় নীল বর্ণ) ফেহলিং দ্রবণ বলে।

 

প্রশ্ন-৯। পলিমারকরণ কাকে বলে?

উত্তরঃ একই পদার্থের অসংখ্য অণু বা একাধিক পদার্থের অসংখ্য অণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে বৃহৎ আকারের অণু গঠন করার প্রক্রিয়াকে পলিমারকরণ বলে।

 

 

প্রশ্ন-১০। পোলারায়ন কাকে বলে?

উত্তরঃ একটি আয়নের প্রভাবে অন্য আয়নের ইলেকট্রন মেঘের বিকৃতি সংঘটিত হওয়াকে পোলারায়ন বলে।

 

প্রশ্ন-১১। HOMO ও LUMO কি?

উত্তরঃ HOMO : HOMO-এর পূর্ণরূপ হলো– Highest Occupied Molecular Orbital। অর্থাৎ সর্বোচ্চ অধিকৃত আণবিক অরবিটাল।

LUMO : LUMO-এর পূর্ণরূপ হলো– Lowest Unoccupied Molecular Orbital। অর্থাৎ নিম্নতর অধিকৃত আণবিক অরবিটাল।

 

 

প্রশ্ন-১২। কার্যকরী মূলক কাকে বলে?

উত্তরঃ যে সকল পরমাণু বা পরমাণুগুচ্ছ বা মূলক কোনো জৈব যৌগের অণুতে বিদ্যমান থেকে ঐ যৌগের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি কার্যত রাসায়নিক বিক্রিয়া নির্ধারণ করে তাদেরকে কার্যকরী মূলক (Functional Groups) বলে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্ন-১৩। জুল-থমসন পরীক্ষায় গ্যাসের তাপমাত্রা হ্রাস পায় কেন?
উত্তরঃ জুল-থমসন পরীক্ষায় সংকুচিত অবস্থায় গ্যাস অণুসমূহ পরস্পরের কাছাকাছি থাকায় তাদের মধ্যে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল বিরাজ করে। সম্প্রসারণের সময় গ্যাস অণুসমূহ পরস্পরের দূরে সরে যাওয়ার সময় আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বলের বিপরীতে কাজ করতে হয়। এ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি গ্যাস নিজ হতে শোষণ করে বলে জুল থমসন প্রভাবে গ্যাসের তাপমাত্রা হ্রাস পায়।

প্রশ্ন-১৪। গ্যাং বা খনিজ মল কাকে বলে?
উত্তরঃ প্রকৃতিগতভাবে বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের সাথে বালু, পাথর, কাদামাটি ও অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় পদার্থ অপদ্রব্য বা ভেজালরূপে মিশ্রিত থাকে, তাদের গ্যাং বা খনিজ মল বলে।

প্রশ্ন-১৫। পানিগ্রাসী পদার্থ বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ যেসব দানাদার কঠিন পদার্থ বায়ু থেকে সাধারণ তাপমাত্রায় ধীরে ধীরে জলীয়বাষ্প শোষণ করে প্রথমে সিক্ত হয় এবং পরে তরলে পরিণত হয় তাদের পানিগ্রাসী পদার্থ বলে। যেমন– খাবার লবণ।

প্রশ্ন-১৬। প্রতিপ্রভ বা ফ্লোরোসেন্স পদার্থ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল পদার্থ 200–375 ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট বর্ণালি শোষণ করে কিন্তু 375–780 ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট বর্ণালি বিকিরণ করে, সে সকল পদার্থকে প্রতিপ্রভ বা ফ্লোরোসেন্স পদার্থ বলে।

প্রশ্ন-১৭। উদ্বায়ী তরল কাকে বলে?
উত্তরঃ যদি কোনো তরল পদার্থকে তাপ দিয়ে বাষ্পীভূত করা হয় এবং বাষ্পকে শীতল করার পর একই তরল পদার্থ পাওয়া যায়, তবে তাকে উদ্বায়ী তরল বলে।

প্রশ্ন-১৮। পরমাণু মডেল কাকে বলে?
উত্তরঃ পরমাণুতে ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন কীভাবে বিন্যস্ত থাকে, তার উপস্থাপনাকে পরমাণু মডেল বলে। যেমন- থমসন পামপুডিং পরমাণু মডেল, রাদারফোর্ড পরমাণু মডেল, বোর পরমাণু মডেল ইত্যাদি।

প্রশ্ন-১৯। কিউরিং কাকে বলে?
উত্তরঃ কাঁচা চামড়ার উপর লবণ ছিটিয়ে এর ভিতরের পানিকে বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে কিউরিং বলে।

প্রশ্ন-২০। ওয়াটার গ্যাস কি?
উত্তরঃ সম-আয়তন কার্বন মনো-অক্সাইড ও H2 গ্যাসের মিশ্রণকে ওয়াটার গ্যাস বলে। এটি হাইড্রোজেন উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।