জৈব যৌগের শিকলে দুটি কার্বন পরমাণুর মধ্যে দ্বি-বন্ধন বা ত্রিবন্ধন থাকলে তাদের অসম্পৃক্ত যৌগ বলে এবং এদের বৈশিষ্ট্যসমূহকে অসম্পৃক্ততা বলে। অসম্পৃক্ততার পরীক্ষা দুই প্রকার। যথা- (১) ব্রোমিন দ্রবণ পরীক্ষা ও (২) বেয়ার পরীক্ষা/KMnO4 দ্বারা পরীক্ষা।
ব্রোমিন দ্রবণ পরীক্ষা
ব্রোমিনকে জৈব দ্রাবকে বা পানিতে দ্রবীভূত করে লাল/বাদামি বর্ণের দ্রবণ প্রস্তুত করা হয়। সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের মধ্যে পৃকভাবে কয়েকফোঁটা ব্রোমিন দ্রবণ যোগ করে ঝাঁকাতে হয়। সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন লাল/বাদামি বর্ণের ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না এবং দ্রবণের লাল/বাদামি বর্ণের কোনো পরিবর্তন হয় না। অপরদিকে অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন (অ্যালকিন বা অ্যালকাইন) লাল/বাদামি বর্ণের ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধনে অথবা ত্রি-বন্ধনে ব্রোমিন অণু যুক্ত হয়। ফলে ব্রোমিন দ্রবণের লাল/বাদামি বর্ণ বিনষ্ট হয়। বিক্রিয়ায় ব্রোমিন দ্রবণের বর্ণ পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করে সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের মধ্যে পার্থক্য করা হয়।
বেয়ার পরীক্ষা
বেয়ারের পরীক্ষার বিকারক হিসেবে শীতল ক্ষারীয় KMnO4 দ্রবণ ব্যবহৃত হয়। এটি একটি শক্তিশালী জারক পদার্থ হিসেবে জারণ ঘটায়, সেই সাথে নিজে বিজারিত হয়। কোনো যৌগে দ্বিবন্ধন বা ত্রিবন্ধন (-C=C- or -C≡C-) উপস্থিত থাকলে তা দ্রবণের বর্ণ গোলাপি থেকে বর্ণহীন করে দেয়। এটি একটি ইলেকট্রনাকর্ষী যুত বিক্রিয়া। অ্যালডিহাইডসমূহ এবং ফরমিক এসিড (ফরমিক এসিডের এস্টারও) এই বিক্রিয়ায় অনুরূপ ফলাফল প্রদর্শন করে।