যৌগিক বা জটিল অণুবীক্ষণযন্ত্র কাকে বলে? জটিল অণুবীক্ষণযন্ত্র এর গঠন।

যেসব বস্তু বা তার অংশবিশেষ খালি চোখে কিছুতেই দেখা যায় না এবং দৃষ্টিগোচরের জন্য তাদের যে যন্ত্রের মাধ্যমে বর্ধিত করতে হয় তাকে জটিল অণুবীক্ষণযন্ত্র (Compound Microscope) বলে।

 

যৌগিক বা জটিল অণুবীক্ষণযন্ত্র এর গঠন

যৌগিক অণুবীক্ষণযন্ত্রে সাধারনত নিম্নেবর্ণিত অংশগুলো বিদ্যমান থাকেঃ

 

(i) পাদদেশ (Base) : অণুবীক্ষণযন্ত্রের নিম্নাঞ্চলের ঘোড়ার খুরের মতো যে অংশটির উপর সমগ্র যন্ত্রটি অবস্থান করে তাকে পাদদেশ বলে

 

 

 

 

 

 

 

 

 

(ii) স্তম্ভ (Pillar) : পাদদেশের উপরে অবস্থিত এটি বেশ দৃঢ় ও চওড়া নিরেট অংশ।

 

(iii) বাহু (Arm) : স্তম্ভের উপরে ইংরেজী “C” অক্ষরের মত বাঁকা অংশটিকে বাহু বলে। এটি স্ক্রুর সাহায্যে স্তম্ভের সাথে যুক্ত থাকে। বাহুটিকে প্রয়োজনমত পেছনের দিকে হেলানো যায়।

 

 

 

 

 

 

 

(iv) মঞ্চ ( Stage ) : এটি স্তম্ভের উপরিভাগে অবস্থিত আয়তক্ষেত্রাকৃতি একটি প্লেট বিশেষ। এর মধ্যস্থলে একটি বড় ছিদ্র থাকে। অনেকসময় এ ছিদ্রের পরিমাপ অনুসারে একটি স্বচ্ছ কাঁচ আটকানো থাকে।

 

(v) দেহনল (Body-tube) : এটি বাহুর অগ্রভাগে লম্বভাবে অবস্থিত (সাধারণত ১৬০ মিঃ মিঃ দীর্ঘ) ফাপা নল বিশেষ।

 

 

 

 

 

 

 

(vi) টানা নল (Draw-tube) : এটি দেহনলের ভেতরে থাকে এবং একে স্থূল ও সূক্ষ্ম সন্নিবেশক স্ক্রু (adjust ment screw)-এর সাহায্যে উপরে-নিচে নাড়ানো যায়।

 

(vii) স্থূল ও সূক্ষ্ম সন্নিবেশক স্ক্রু (Coarse and fine adjustment screw) : দেহনলের পেছন দিকে দুটি বড় ও ছোট স্ক্রু থাকে। এদের যথাক্রমে স্থূল ও সূক্ষ্ম সন্নিবেশক স্ক্রু বলে। স্থূল সন্নিবেশক স্ক্রুটিকে ঘুরিয়ে টানানলটিকে দ্রুত উপরে-নিচে উঠানামা করানো যায়। কিন্তু সূক্ষ্ম সন্নিবেশক স্ক্রুটিকে ঘুরালে টানানলটি খুব ধীরে ধীরে উঠানামা করে।

 

 

 

 

 

 

(viii) নোজ পিস (Nose piece) : এটি দেহনলের নিম্নপ্রান্তে অবস্থিত তিন-ছিদ্রযুক্ত গোলাকৃতির একটি অংশ। একে চক্রাকারে ঘুরানো যায়। ছিদ্রগুলোতে বিভিন্ন বিবর্ধনশক্তি সম্পন্ন অভিলক্ষ্য (objective) লাগানো থাকে।

 

(ix) কনডেন্সার (Condenser) : স্টেজের ছিদ্রের নিচে এটি অবস্থিত। দর্পণ থেকে প্রতিফলিত আলোকরশ্মিকে উজ্জ্বলতর করাই এর কাজ।

 

 

 

 

 

 

 

(x) ডায়াফ্রাম (Diaphragm) : এটি কনডেন্সারের নিচে অবস্থিত একটি গোলাকৃতির পর্দা। এর কেন্দ্রস্থলে একটি ছিদ্র থাকে। ছিদ্রের আয়তন ছোট-বড় করা যায়। আলোকরশ্মির তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করাই এর কাজ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

(xi) অভিনেত্র (Eye piece) : এটি দেখতে নলাকৃতির, তবে উপরে ও নিচে একটি করে লেন্স লাগানো থাকে। অভিনেত্র টানানলের ভিতরে ঢুকানো থাকে। এটি বিভিন্ন বিবর্ধন শক্তিসম্পন্ন (যেমন- 7x, 10x, 15x, 20x, 40x ইত্যাদি) হয়ে থাকে।

(xii) অভিলক্ষ্য (Objective) : এটিও নলাকৃতির ও লেন্সযুক্ত। নোজ পিসের গর্তে বিভিন্ন বিবর্ধনশক্তি সম্পন্ন (যেমন –4×, 10x, 40x, 60x, 100x ইত্যাদি) অভিলক্ষ্য প্যাচের মাধ্যমে যুক্ত থাকে।

(xiii) দর্পণ (Mirror) : মঞ্চের নিচে একটি সম-অবতল দর্পণ দন্ডের সাহায্যে স্তম্ভের সাথে লাগানো থাকে। দর্পণটি প্রয়োজনমতো বিভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে মঞ্চের ছিদ্রের ভেতর দিয়ে আলো প্রতিফলনের দিক নিয়ন্ত্রন করা যায়।