ব্যাপন (Diffusion), অভিস্রবণ (Osmosis) এবং প্রস্বেদন (Transpiration)।

ব্যাপন, অভিস্রবণ এবং প্রস্বেদন (Diffusion, Osmosis and Transpiration in Bengali)

 

উদ্ভিদ দেহের বিভিন্ন কার্যাবলি সম্পাদনে ব্যাপন, অভিস্রবণ ও প্রস্বেদন প্রক্রিয়াগুলো ভূমিকা রাখে। উদ্ভিদদেহের পাশাপাশি প্রাণিদেহে এবং বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ব্যাপন ও অভিস্রবণের ভূমিকা রয়েছে।

 

ব্যাপন (Diffusion)

একই তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলীয় চাপে কোনো পদার্থের অণুগুলো অধিক ঘন স্থান থেকে কম ঘন স্থানে ছড়িয়ে পড়াকে ব্যাপন বলে। তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের ক্ষেত্রে ব্যাপন ঘটে।

 

 

 

 

 

 

 

ব্যাপনের গুরুত্ব (Importance of Diffusion) :

১। ব্যাপন প্রক্রিয়ায় সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে উদ্ভিদ CO2 গ্রহণ এবং O2 ত্যাগ করে। আবার একই প্রক্রিয়ায় শ্বসনের মাধ্যমে প্রাণী O2 গ্রহণ এবং CO2 ত্যাগ করে।

২। প্রস্বেদনের মাধ্যমে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ বাষ্পাকারে দেহ থেকে পানি বের করে দেয়।

৩। ব্যাপন প্রক্রিয়ায় প্রাণিদেহে রক্ত থেকে পুষ্টি উপাদান, অক্সিজেন ইত্যাদি লসিকায় বহন ও লসিকা থেকে কোষে পরিবহন করে।

 

অভিস্রবণ (Osmosis)

 

 

 

 

 

 

 

 

একই দ্রব ও দ্রাবক বিশিষ্ট দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একটি অর্ধভেদ্য পর্দা দ্বারা পৃথক থাকলে যে ভৌত প্রক্রিয়ায় দ্রাবক কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে অধিক ঘনত্বের দ্রবণের দিকে ব্যাপিত হয় তাকে অভিস্রবণ বলে। কঠিন ও তরল পদার্থের মধ্যে অভিস্রবণ ঘটে।

 

অভিস্রবণের গুরুত্ব (Importance of Osmosis) :

১। অভিস্রবণের মাধ্যমে জীবকোষের মধ্যে বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়াগুলো সচল থাকে।

২। উদ্ভিদ এককোষী মূলরোম দিয়ে মাটি থেকে পানি ও পানিতে দ্রবীভূত খনিজ লবণ শোষণ করে।

৩। প্রাণীর অন্ত্রে খাদ্য শোষিত হয় অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রস্বেদন (Transpiration)

 

উদ্ভিদের দেহাভ্যন্তর থেকে পাতার মাধ্যমে বাষ্পাকারে পানি নির্গমন প্রক্রিয়াকে প্রস্বেদন বলে। প্রস্বেদন সংঘটিত হওয়ার স্থানের ভিত্তিতে প্রস্বেদন তিন প্রকার। যথাঃ–

১। পত্ররন্ধ্রীয় প্রস্বেদন।

২। ত্বকীয় বা কিউটিকুলার প্রস্বেদন।

৩। লেন্টিকুলার প্রস্বেদন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রস্বেদনের গুরুত্ব (Importance of Transpiration) :
১। প্রস্বেদনের ফলে উদ্ভিদ দেহ থেকে পানি বের করে দিয়ে অতিরিক্ত পানির চাপ থেকে মুক্ত হয়।
২। প্রস্বেদন কোষরসের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে। ফলে উদ্ভিদ সহজে মূল দিয়ে পানি ও খনিজ লবণ শোষণ করতে পারে।
৩। প্রস্বেদনের কারণে উদ্ভিদ দেহ ঠাণ্ডা থাকে এবং পাতার আর্দ্রতা বজায় থাকে।
৪। কিন্তু প্রস্বেদন অতিরিক্ত পানি বের করে দেয় বলে একে উদ্ভিদের “Necessary evil” বলে।