পিত্তরস ক্ষার জাতীয় তরল পদার্থ। এতে কোন এনজাইম থাকে না। পিত্তরসের সোডিয়াম বাইকার্বনেট উপাদানটি পাকস্থলি থেকে আগত HCl-কে প্রশমিত করে ক্ষারীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে যা ক্ষুদ্রান্ত্রে বিভিন্ন এনজাইমের কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। পিত্তরসে অবস্থিত পিত্তলবণের প্রভাবে চর্বির ক্ষুদ্র বিন্দুগুলো ভেঙ্গে অতিক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয়। এ প্রক্রিয়াকে ইমালসিফিকেশন (Emulsification) বলে। এর ফলে লাইপেজের সহযোগিতায় স্নেহ পদার্থ সহজে পরিপাক হয়।
বিভিন্ন প্রকার রসের কাজগুলো কী কী?
লালারসের যান্ত্রিক কাজ
লালারসের যান্ত্রিক কাজগুলো হলো–
১। লালা মুখবিবরকে সর্বদা আর্দ্র রেখে কথা বলতে সহায়তা করে।
২। এটি খাদ্যবস্তুকে সিক্ত করে এবং চর্বণের সময় লুব্রিক্রেন্ট হিসেবে কাজ করে।
৩। লালা উত্তপ্ত ও প্রদাহিক বস্তুকে প্রশমিত করে মুখের মিউকাস প্রাচীরকে রক্ষা করে।
৪। এটি খাদ্যের সাথে আগত ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণুকে ধ্বংস করে।
গ্যাস্ট্রিক রসের কাজ
গ্যাস্ট্রিক রসের কাজগুলো হলো–
১। গ্যাস্ট্রিক রসে বিদ্যমান HCl পাকস্থলিতে অম্লীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে, ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং নিষ্ক্রিয় এনজাইমকে সক্রিয় করে।
২। পেপসিন এনজাইম HCI-এর সাথে মিশে প্রোটিনকে পেপটোনে পরিণত করে।
৩। রেনিন এনজাইম দুধের ক্যাসিনোজেনকে ক্যাসিনে পরিণত করে।
৪। গ্যাস্ট্রিক রস পাকস্থলির প্রাচীকে সুরক্ষা করে।
৫। কিছু বিষাক্ত বস্তু, ভারী ধাতু, অ্যালক্যালয়েড বস্তু ইত্যাদি গ্যাস্ট্রিক রসের সাথে দেহ হতে বহিষ্কৃত হয়।
অগ্ন্যাশয় রসের কাজ
অগ্ন্যাশয় রসের কাজগুলো হলো–
১। এটি ক্ষারীয় প্রকৃতির হওয়ায় সম পরিমাণ পাকস্থলিয় রসকে প্রশমিত করে।
২। অগ্ন্যাশয় রসে বিদ্যমান অ্যামাইলেজ, মল্টেজ, সুক্রেজ, ল্যাক্টেজ এনজাইম শর্করা জাতীয় খাদ্যকে পরিপাক করে।
৩। ট্রিপসিন, কাইমোট্রিপসিন, নিউক্লিয়েজ এনজাইম আমিষ জাতীয় খাদ্যকে পরিপাক করে।
৪। লাইপেজ এনজাইম স্নেহ জাতীয় খাদ্যকে পরিপাক করে।
আন্ত্রিক রসের কাজ
আন্ত্রিক রসের কাজগুলো হলো–
১। আন্ত্রিক রসে বিদ্যমান মিউকাস অন্ত্রের প্রাচীরকে বিভিন্ন এনজাইমের ক্রিয়া থেকে রক্ষা করে।
২। এতে বিদ্যমান সক্রিয়ক এন্টারোকাইনেজ নিষ্ক্রিয় ট্রিপসিনোজেনকে ট্রিপসিনে পরিণত করে।
৩। এতে বিদ্যমান মল্টেজ, সুক্রেজ ও ল্যাক্টেজ এনজাইম যথাক্রমে মল্টোজ, সুক্রোজ ও ল্যাক্টোজ শর্করাকে গ্লুকোজ পরিণত করে।
৪। এত বিদ্যমান পেপটাইডেজ এনজাইম পলিপেপটাইডকে অ্যামিনো এসিডে পরিণত করে।