তরুণাস্থি কাকে বলে? তরুণাস্থি কত ধরনের?

কঙ্কালতন্ত্রের অপেক্ষাকৃত নরম ও স্থিতিস্থাপক অস্থিকে তরুণাস্থি বলে। এটি যোজক কলার ভিন্ন রূপ। এর মাতৃকা হলো কন্ড্রিন ও এতে কন্ড্রিওসাইট কোষ থাকে। তরুণাস্থি একটি চকচকে সাদা আবরণ দ্বারা বেষ্টিত থাকে যার নাম পেরিকন্ড্রিয়াম। দেহে অস্থির কিছু অংশে ও অস্থির সংযোগ স্থলে সাদা, নীলাভ ও চকচকে এই তরুণাস্থির উপস্থিতি দেখা যায়।

 

স্থায়িত্বের ভিত্তিতে তরুণাস্থি দুই ধরনের। যথা:

 

অস্থায়ী তরুণাস্থি বা তরুণাস্থি এবং

স্থায়ী তরুণাস্থি বা কোমলাস্থি

 

 

 

 

 

i. অস্থায়ী তরুণাস্থি: এ তরুণাস্থির মাতৃকায় ক্যালসিয়াম যৌগ সঞ্চিত থাকে। পরবর্তীতে তা অস্থিতে পরিণত হয়। যেমন— বাচ্চা মুরগির বুকের স্টারনামের অগ্রভাগ।

 

ii. স্থায়ী তরুণাস্থি : এ তরুণাস্থি কখনো অস্থিতে পরিণত হয় না। সব সময় নমনীয় থাকে। যেমন- স্তন্যপায়ীর কানের পিনা, নাকের তরুণাস্থি।

 

 

 

 

 

 

মাতৃকার গঠনের ভিত্তিতে তরুণাস্থিকে তিন ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথাঃ

 

স্বচ্ছ বা কাঁচিক তরুণাস্থি,

তন্তুময় তরুণাস্থি এবং

ক্যালসিফাইড তরুণাস্থি।

 

 

 

 

 

 

i. স্বচ্ছ বা কঁচিক তরুণাস্থি : এ তরুণাস্থির মাতৃকা স্বচ্ছ, দৃঢ়, স্থিতিস্থাপক, নমনীয় ও সমসত্ত্ব। এ কলার মাতৃকায় কোনো তন্তু থাকে না। জীবিত অবস্থায় এ কলা নীলাভ দেখায়। যেমন- স্তন্যপায়ী প্রাণীদের নাক, শ্বাসনালি ইত্যাদিতে এ কলা বিদ্যমান।

 

ii. তন্তুময় তরুণাস্থি : এ তরুনাস্থির মাতৃকা সমসত্ত্ব নয়। এতে এক বা একাধিক ধরনের তন্তু বিদ্যমান। তন্তুময় তরুনাস্থি আবার দুই প্রকার। যথা: পীততন্তুময় তরুণাস্থি; যাতে হালকা হলুদ বর্ণের অস্বচ্ছ পীততন্তু বিদ্যমান। যেমন- বহিঃকর্ণ, কণ্ঠনালির তরুণাস্থি এবং শ্বেত তন্তুময় তরুণাস্থি: যাতে সূক্ষ্ম সমান্তরাল সাদা তন্তু বিদ্যমান। যেমন: মেরুদণ্ডী প্রাণীদের আন্তঃকশেরুকা চাকতি শ্বেত তন্তুময় তরুণাস্থি দ্বারা গঠিত।

 

 

 

 

 

 

 

iii. ক্যালসিফাইড তরুণাস্থি : লম্বা অস্থির শীর্ষভাগে এ ধরনের তরুণাস্থি থাকে। এদের মাতৃকায় প্রচুর ক্যালসিয়াম কার্বনেট থাকে। যেমন- হিউমেরাস, ফিমার অস্থির প্রান্তীয় অঞ্চলে এ তরুণাস্থি পাওয়া যায়।