ক্ষারীয় মাটি কাকে বলে? ক্ষারীয় মাটির বৈশিষ্ট্য কি কি?

যে মাটির pH মান ৭.০ এর বেশি সে মাটিকে ক্ষারীয় মাটি বলে। ক্ষারীয় মাটিতে সব ধরনের চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না। তাই মাটিতে প্রচুর পরিমাণে জৈব সার বা পরিমাণমত জিপসাম ব্যবহার করতে হয়।

 

ক্ষারীয় মাটির বৈশিষ্ট্য কি কি?

 

ক্ষারীয় মাটির বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরা হলোঃ

 

 

 

 

 

 

 

 

  • ক্ষারীয় মাটির অম্লমান বা pH ৭ এর বেশি হয়।
  • এ মাটিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এর পরিমাণ বেশি থাকে।
  • ক্ষারীয় মাটিতে সাধারণত তামা, বোরন ও দস্তার অভাব দেখা যায়।
  • বিনিময়ক্ষম সোডিয়ামের পরিমাণ ১৫% এর বেশি থাকে।
  • সোডিয়াম বেশি থাকায় মাটি বিষাক্ত হয়।
  • আয়রণ, অ্যালুমিনিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের দ্রবণীয়তা কমে যায়।
  • অণুজীবের কার্যাবলি কম হয়।
  • জৈব পদার্থ পচে না বা বিয়োজিত হয় না।
  • মাটিতে ফসফরাসের সহজলভ্যতা কমে যায়।
  • কর্দম কণা ও জৈব পদার্থের পরিমাণ কম থাকে।
  • ক্ষারীয় মাটিতে নারিকেল, সুপারি, আখ, খেজুর ও ডাল জাতীয় শস্য ভালো হয়।
  • ক্ষারীয় মাটি সংশোধন

ক্ষারীয় মাটি নিম্নোক্ত তিন ভাবে সংশোধন করা যায়।

 

(১) দূরীকরণ (Eradication) : ক্ষারীয় মাটির ক্ষারত্ব দূর করার প্রথম উপায় হলো মাটিতে থাকা লবণ অপসারণ করা। এজন্য মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ লবণযুক্ত পানি সেচ দিয়ে নিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে করে মাটির ক্ষার দ্রব্য ধুয়ে যাবে। মাটিতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম এর আধিক্য থাকলে এ প্রক্রিয়া কার্যকরী হবে না।

 

 

 

 

 

 

 

(২) রূপান্তর (Conversion) : মাটিতে সোডিয়াম বেশি থাকলে জিপসাম বা ক্যালসিয়াম ফসফেট ব্যবহার করে তা দূর করা যায়। জিপসাম বা ক্যালসিয়াম আয়ন দ্বারা সোডিয়াম আয়ন প্রতিস্থাপিত হয়ে যায়। এ অবস্থায় জমিতে সেচ দিলে দ্রবণীয় Na2SO4 নিষ্কাশিত পানির সাথে বেরিয়ে গিয়ে মাটি ক্ষারযুক্ত হয়।

(৩) নিয়ন্ত্রণ (Control) : পানির বাষ্পায়ন কমিয়ে লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। লোনা মাটিতে ক্যালসিয়াম সালফেট ও সেচের পানি প্রয়োগ করলে লবণাক্ততা কমে। এতে পানির অম্লমান কমে কলোয়েড কণা পুঞ্জীভূত হয়। মাটির অম্লমান কম রাখার জন্য সেচের পানিতে H2SO4 মিশিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া ক্ষার সহনশীল ফসল চাষ করেও ক্ষারত্ব নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ক্ষারীয় মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে চিনিকলের বর্জ্য (চিটাগুড়) প্রয়োগ করলেও মাটির ক্ষারত্ব কমে যায়।