কোনো বৈদ্যুতিক বর্তনীতে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে একক সময়ে ইলেকট্রন প্রবাহকে ইলেকট্রিক বা বৈদ্যুতিক কারেন্ট বলে। অন্যভাবে বলা যায় যে, কোনো পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ চার্জ প্রবাহিত হয় তাকে বৈদ্যুতিক কারেন্ট বলে। একে I দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এর ব্যবহারিক একক অ্যাম্পিয়ার।
ইলেকট্রিক কারেন্টের একক ও প্রতীক
কারেন্ট একটি পরিমাপক রাশি। সুতরাং, কারেন্টের একক আছে। অ্যামিটারের সাহায্যে কারেন্টের একককে পরিমাপ করা যায়। কারেন্ট মাত্রার চারটি একক আছে। যথা–
(ক) সিজিএস বিদ্যুৎ একক;
(খ) স্থির বিদ্যুৎ একক;
(গ) সিজিএস বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় একক;
(ঘ) ব্যবহারিক একক।
কারেন্টকে I প্রতীক দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
ইলেকট্রিক কারেন্টের শ্রেণিবিভাগ
কারেন্ট প্রধানতঃ দুই প্রকার। যথা–
(ক) স্থির বিদ্যুৎ : যে বিদ্যুৎ স্থান পরিবর্তন করে না এবং উৎস স্থলেই থেকে যায় তাকে স্থির বিদ্যুৎ বলে। ঘর্ষনের ফলে এ বিদ্যুৎ উৎপত্তি হয় বলে একে ঘর্ষণ বিদ্যুৎ বলে।
(খ) চল বিদ্যুৎ : রূপান্তরিত প্রক্রিয়ার সাহায্যে কাজে লাগিয়ে উৎপাদিত বিদ্যুৎ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় প্রবাহিত করানো যায় তাকে চল বিদ্যুৎ বলে। পরিবাহী পদার্থের মধ্যে দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহের ফলে এ বিদ্যুতের সৃষ্টি হয়।
প্রবাহ অনুসারে চল বিদ্যুৎ আবার দুই প্রকার। যথা–
(ক) ডিসি কারেন্ট : যে কারেন্টের মান ও দিক অপরিবর্তিত রেখে সার্কিটে প্রবাহিত হয় তাকে ডিসি বা ডাইরেক্ট কারেন্ট বলে।
(খ) এসি কারেন্ট : যে কারেন্টের মান ও দিক সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়ে সার্কিটে প্রবাহিত হয় তাকে এসি বা অল্টারনেটিং কারেন্ট বলে।
ইলেকট্রিক কারেন্ট পরিমাপের বিভিন্ন এককের মধ্যে সম্পর্ক
ইলেকট্রিক কারেন্ট পরিমাপের বিভিন্ন এককের মধ্যে সম্পর্ক নিম্নে দেখানো হলো–
(ক) সিজিএস বিদ্যুৎ একক : সিজিএস পদ্ধতিতে চার্জের একককে স্থির বিদ্যুৎ একক বলে। ১ স্থির বিদ্যুৎ একক = ৩.৩৩ × ১০-১০ অ্যাম্পিয়ার।
(খ) সিজিএস বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় একক : কোনো পরিবাহীর কুণ্ডলীর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে চুম্বকক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়। সিজিএস পদ্ধতিতে চুম্বকক্ষেত্র বিদ্যুৎ প্রবাহের একককে সিজিএস বিদ্যুৎ চুম্বকীয় একক বলে। ১ বিদ্যুৎ চুম্বকীয় একক = ১০ অ্যাম্পিয়ার।