বর্ণালি কাকে বলে? বর্ণালির শ্রেণীবিভাগ। What is called Spectrum?

বর্ণালি কাকে বলে? (What is called Spectrum in Bengali ? )

কোন মাধ্যমে প্রতিসরণের ফলে যৌগিক আলোর বিচ্ছুরণের জন্য মূল রংগুলোর যে পট্টি বা সজ্জা পাওয়া যায় তাকে বর্ণালি (Spectrum) বলে। বর্ণালিতে সাতটি রং থাকে। এগুলো হলো- বেগুনী, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। সাতটি বর্ণের নামের অধ্যক্ষর নিয়ে সংক্ষেপে বলা হয় বেণী আসহকলা।

 

বর্ণালি উৎপত্তির কারণ

আলোক রশ্মি এক স্বচ্ছ মাধ্যম হতে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে যাওয়ার সময় আলোকরশ্মি বিভেদ তলে বেঁকে যায়। মাধ্যমের প্রকৃতি এবং আলোর রঙের উপর নির্ভর করে আলোকরশ্মি কতটুকু বেঁকে যাবে। ফলে আলোকরশ্মি যখন প্রিজমের মধ্য দিয়ে যায় তখন বিভিন্ন রঙের আলোর বাঁকের পরিমাণ একেক রকম হওয়ায় প্রিজম হতে আলো সাতটি রঙে বিশ্লিষ্ট হয়। প্রিজমের পিছনে একটি সাদা পর্দা রাখলে তাতে সাদা আলোর সাতটি রঙে বিশ্লিষ্ট রঙগুলোর একটি পট্টি পাওয়া যাবে। শূন্য মাধ্যম ব্যতীত অন্য যেকোনো মাধ্যমে রঙ ভেদে তাদের বেগ ভিন্ন ভিন্ন হয়। এজন্য মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্কও একেক রঙের জন্য একেক রকম হয়।

 

বর্ণালির শ্রেণীবিভাগ (Classification of Spectra)

উৎস অনুসারে বর্ণালিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :

১. নিঃসরণ বর্ণালি (Emission spectra) ও

২. শোষণ বর্ণালি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

১.নিঃসরণ বর্ণালি (Emission spectra )

অতি উত্তপ্ত কোনো বস্তু থেকে নিঃসৃত আলোক রশ্মি বিশ্লেষণ করে যে বর্ণালি পাওয়া যায় তাকে নিঃসরণ বর্ণালি বলে। নিঃসরণ বর্ণালি আবার তিন প্রকার। যথা :

 

ক. অবিচ্ছিন্ন বর্ণালি (Continuous spectera): যে নিঃসৃত বা নির্গমন বর্ণালীতে লাল হতে বেগুনী পর্যন্ত সাতটি বর্ণই একের পর এক অবিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকে, তাকে অবিচ্ছিন্ন বর্ণালী বলে।

 

 

 

 

 

 

খ. রেখা বর্ণালি (Line spectra ) : কালো রেখা দ্বারা পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন, বিভিন্ন বর্ণের উজ্জ্বল রেখার বর্ণালিকে রেখা বর্ণালি বলে।

 

গ. পট্টি বা পাড় বর্ণালি (Band spectra ) : অনেক সময় রেখা বর্ণালির মধ্যকার ফাঁক কমে যাওয়ায় লেখাগুলোকে আর আলাদা করা যায় না। এরা পরস্পর সাথে মিশে যে বর্ণালির সৃষ্টি করে তাকে পট্টি বর্ণালি বলে।

 

 

 

 

 

অবিচ্ছিন্ন বর্ণালিতে কোন কালো পট্টি থাকে না। কিন্তু পট্টি বর্ণালিতে কালো পট্টির ফাঁক দেখা যায়।

 

২. শোষণ বর্ণালি

সাদা আলোর গতিপথে কোনো স্বচ্ছ রঙিন বস্তু রাখলে, বস্তুটি নিজের রঙ ব্যতিত কতগুলো রশ্মি শোষণ করে। এক্ষেত্রে প্রাপ্ত বর্ণালিতে দেখা যায়, শোষণকৃত রঙগুলো বর্ণালিতে অনুপস্থিত। এ ধরনের বর্ণালিকে শোষণ বর্ণালি বলা হয়। শোষণ বর্ণালিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :

 

 

 

 

 

 

 

ক. কালো রেখা বর্ণালি (Dark line spectra) ও

খ. কালো পট্টি বর্ণালি (Dark Band spectra)

 

সৌর বর্ণালি কাকে বলে?

সূর্যরশ্মি বিচ্ছুরণের ফলে সৃষ্ট বর্ণালিকে সৌর বর্ণালি বলে। একে দৃশ্যমান বর্ণালিও বলে।

 

 

 

 

 

 

 

 

শুদ্ধ ও অশুদ্ধ বর্ণালি কাকে বলে?

শুদ্ধ বর্ণালি : যে বর্ণালিতে বর্ণগুলো নিজ নিজ স্থান অধিকার করে থাকে এবং এক বর্ণের সাথে অপর বর্ণের মিশ্রণ হয় না তাকে শুদ্ধ বর্ণালি বলে।

অশুদ্ধ বর্ণালি : যে বর্ণালিতে বিভিন্ন বর্ণ নিজ নিজ স্থান অধিকার করে থাকে না বরং এক বর্ণের সাথে অপর বর্ণ মিশ্রিত অবস্থায় থাকে তাকে অশুদ্ধ বর্ণালি বলে।