হেপাটাইটিস কি? (What is Hepatitis in Bengali?)
হেপাটাইটিস হলো লিভারের একটি মারাত্মক রোগ, যা হেপাটাইটিস ভাইরাসের আক্রমণে হয়ে থাকে। এই ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর রক্ত এবং দেহ-রসে পাওয়া যায়। হেপাটাইটিস ভাইরাস যা লিভারকে আক্রান্ত করে এমনকি অনেক বছর পরও লিভারে মারাত্মক প্রদাহের সৃষ্টি করতে পারে। যার ফলে লিভারসিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারের কারণে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
আমাদের দেশে এটি জন্ডিস নামে অধিক পরিচিত।
হেপাটাইটিস ভাইরাস বেশ কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। যথা— হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি, ও ই। এ ভাইরাসগুলোকে তাদের বিস্তারের ধরনের ওপর ভিত্তি করে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন :
ক. পানি ও খাদ্যবাহিত ভাইরাস : হেপাটাইটিস ‘এ’ ও হেপাটাইটিস ‘ই’।
খ. ঘনিষ্ঠ সাহচর্য, রক্ত কিংবা দুষিত সিরিঞ্জের সুঁইয়ের মাধ্যমে বাহিত ভাইরাস : হেপাটাইটিস ‘বি’ ‘সি’ ও ‘ডি’।
হেপাটাইটিস ভাইরাসের ৫টি গ্রুপের মধ্যে ‘বি’ এবং ‘সি’ সবচেয়ে বেশি মারাত্মক। এদের সংক্রমণে লিভার ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ হতে পারে।
হেপাটাইটিস ‘এ’ ও ‘ই’-এর বিস্তার, লক্ষণ ও প্রতিকার
রোগের বিস্তার :
হেপাটাইটিস ‘এ’ বা ‘ই’ আক্রান্ত ব্যক্তির মলে এ রোগের জীবাণু দেখতে পাওয়া যায়। তাই যেসব এলাকার স্যানিটেশন ব্যবস্থা খারাপ সেসব এলাকার পানি বা খাদ্যের মাধ্যমে এ রোগের ভাইরাস বিস্তার লাভ করে থাকে।
আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌন সঙ্গমের মাধ্যমে।
পরিবারে কারো এ রোগ হয়ে থাকলে তার মাধ্যমে।
রোগের লক্ষণ : সব রোগীর ক্ষেত্রে এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ নাও পেতে পারে। এর অন্যতম লক্ষণগুলো হলো :
ক. জ্বর বা জ্বরভাব,
খ. দুর্বলতা,
গ. ক্ষুধামান্দ্য,
ঘ. বমিভাব বা তীব্র বমি হওয়া,
ঙ. পেটে অস্বস্তি,
চ. ত্বক ও চোখ হলুদ হওয়া ইত্যদি।
রোগের সুপ্তিকাল : দূষিত পানি বা খাদ্যের মাধ্যমে দেহে প্রবেশের ২-৬ সপ্তাহের মধ্যে হেপাটাইটিস ‘এ’ ও ‘ই’ সংক্রমণের লক্ষণ প্রকাশ পায়।
প্রতিরোধ :
- হেপাটাইটিস ‘এ’ ভ্যাকসিন গ্রহণ।
- সব সময় পরিষ্কার-পরিছন্ন থাকা ও খাওয়ার পূর্বে হাত সাবান দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করা।
- পায়খানার পরে ও ডায়াপার পরিবর্তনের পরে হাত সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধোয়া।
- স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করা।
- রাস্তার ধারের খোলা খাবার না খাওয়া।
- ফুটানো পানি পান করা।