ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধান কাকে বলে? ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধানের নিয়ম কি?

 

 

 

 

 

 

  • দেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য-ণ হয় না। যেমন : ডানা, ডাইনি, টান, টনটন, ঠুনকো ইত্যাদি।
  • বিদেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য-ণ হয় না। যেমন : ইরান, জাপান, লন্ডন, বার্লিন, কর্নেল, ট্রেন, আয়রন, ট্রেনিং, কেরানি, দরুন, বার্নিশ, সাইরেন ইত্যাদি।
  • দন্ত্যধ্বনির আগে মূর্ধন্য-ণ হয় না, দন্ত্য-ন হয়। যেমন : আনন্দ, ইন্দ্ৰ, চন্দন, ছন্দ, দ্বন্দ্ব, নন্দন, মন্দ, স্পন্দন ইত্যাদি।

ষত্ব বিধান কাকে বলে?

ষত্ব বিধান হচ্ছে বানানে ষ ব্যবহারের নিয়ম। বাংলা ভাষায় সাধারণত মূর্ধন্য-ষ ধ্বনির ব্যবহার নেই। তাই দেশি, তদ্ভব ও বিদেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য-ষ ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। কেবল কিছু সংস্কৃত বা তৎসম শব্দে ষ-এর প্রয়োগ রয়েছে। যেসব তৎসম শব্দে ‘ষ’ রয়েছে, তা বাংলায় অবিকৃত আছে। তৎসম শব্দের বানানে মূর্ধন্য ষ-এর ব্যবহারের নিয়মকে ষত্ব বিধান বলে।

 

 

 

 

 

 

রেখে বানানের নিয়ম তৈরি হলেও বাংলা ভাষায় নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের জন্য কোনো কোনো বর্ণের সঠিক উচ্চারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। যেমন মূর্ধন্য ণ-এর নিজের উচ্চারণ এখনো বাংলায় জানা নেই। যেসব সংস্কৃত শব্দে মূর্ধন্য-ণ ছিল, সেসব শব্দ বাংলায় লেখার সময় ণ-এর ব্যবহার চলে এসেছে। সংস্কৃতে ণত্ব ও ষত্বের বিধিবদ্ধ নিয়ম রয়েছে। ণত্ববিধান ও ষত্ববিধান হলো বানানে (ণ, ষ) এই বর্ণ দুটির ব্যবহারের নিয়ম। এই নিয়ম সম্পর্কে ধারণা না থাকলে বানান বিভ্রাট ঘটতে পারে। সেই সাথে ঘটতে পারে অর্থের বিভ্রাট। যেমন ‘আপণ’ ও ‘আপন’। প্রথম শব্দটির অর্থ ‘দোকান’ আর দ্বিতীয়টির অর্থ নিজ। অনুরূপ ‘আষাঢ়’ ও ‘আসার’। ‘আষাঢ়’ শব্দের অর্থ গ্রীষ্মের পরবর্তী মাসবিশেষ এবং ‘আসার’ মানে জলধারা। এসব শব্দের উচ্চারণ একই রকম হলেও বানান ও অর্থ আলাদা। শব্দগুলোর ব্যবহার যথার্থ না হলে বাক্যের অর্থবিভ্রাট ঘটতে পারে। সুতরাং ণত্ব ও ষত্ববিধান সম্পর্কে ধারণা অর্জন এবং তা মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।