যোজক কাকে বলে? যোজক কত প্রকার ও কি কি?

যে শব্দ একটি বাক্য বা বাক্যাংশের সাথে অন্য একটি বাক্য বা বাক্যাংশের কিংবা বাক্যস্থিত একটি শব্দের সঙ্গে অন্য শব্দের সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায় তাকে যোজক বলে। যেমন–

 

আমি পড়া বলে দিব আর তুমি লিখবে।

আমি গান গাইব আর তুমি নাচবে।

তুমি বসে বসে খাবে আর আসিফ পড়বে!

আবার বলা যায়, যেসব শব্দ একটি বাক্যের সাথে অন্য একটি বাক্যের বা বাক্যের অন্তর্গত একটি পদের সাথে অন্য পদের সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায় তাকে যোজক বলে। অর্থাৎ, এর কাজ হলো একাধিক শব্দ পদবন্ধ, বাক্যকল্প বা বাক্যকে জুড়ে দেওয়া বা এক করা। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় –

 

এতগুলো সবজি আর মাছ ওই ব্যাগে ধরবে?

ইফাদ আর আসিফ একে অপরের বন্ধু।

জলদি লাইব্রেরিতে যাও এবং একটি বই কিনে আনো।

সে ঢাকা যাবে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেখবে।

যোজক কত প্রকার ও কি কি?

অর্থ এবং সংযোজনের ধরন ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী যোজক শব্দ ৫ প্রকার। এগুলো হলো –

 

 

  • সাধারণ যোজক
  • বৈকল্পিক বা বিকল্প যোজক
  • বিরোধমূলক যোজক
  • কারণবাচক যোজক
  • সাপেক্ষ যোজক
  • নিম্নে এসব প্রকার সম্পর্কে উদাহরণসহ বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

সাধারণ যোজক কাকে বলে?

সাধারণ যোজক : যে যোজক দ্বারা একাধিক শব্দ, বাক্য বা বাক্যাংশকে সংযুক্ত করা যায় তাকে সাধারণ যোজক বলে। এক কথায় বলা যায়, যে যোজক দুটি শব্দ বা বাক্যকল্পকে জুড়ে দেয় তাকে সাধারণত যোজক বলে। যেমন– এবং, আর, ও, কিংবা, তথা ইত্যাদি।

 

 

 

 

 

 

 

উদাহরণঃ

 

  • আমি ও আমার বন্ধু কক্সবাজারে ঘুরতে এসেছি।
  • এতগুলো আম আর লিচু ওই ব্যাগে ধরবে?
  • সে ভারত যাবে এবং তাজমহল দেখবে।
  • মুসলমানদের সমাজ আর হিন্দুদের সমাজ এক নয়।
  • সুখ ও সমৃদ্ধি কে না চায়?
  • জলদি বাজারে যাও এবং একটি মাছ কিনে আনো।

বৈকল্পিক বা বিকল্প যোজক কাকে বলে?

বৈকল্পিক যোজক : যে যোজক দ্বারা একাধিক শব্দ, বাক্য বা বাক্যাংশের মধ্যে বিকল্প বোঝায় তাকে বৈকল্পিক যোজক বলে। অর্থাৎ, যে যোজক একাধিক শব্দ বা বাক্যকল্প বা বাক্যের বিকল্প নির্দেশ করে, তাকে বিকল্প যোজক বলে।

 

 

 

 

 

উদাহরণঃ

 

  • তুমি বা তোমার বাবা যে কেউ আসলেই চলবে।
  • শাওন হয় ট্রেনে নাহয় বাসে করে অফিসে যাবে।
  • সারাদিন খুঁজলাম, অথচ কোথাও কারো কাছে কোন সাহায্য পেলাম না।
  • শরীর ভালো হলে তুমি কাজ করবে নতুবা বসে বসে কাজের তদারকি করবে।

বিরোধমূলক যোজক কাকে বলে?

বিরোধমূলক যোজক : যে যোজক দুটি বাক্যের সংযোগ ঘটিয়ে দ্বিতীয়টির সাহায্যে প্রথম বাক্যের বক্তব্যের সংশোধন বা বিরোধ নির্দেশ করে, তাকে বিরোধমূলক যোজক বলে। অর্থাৎ বলা যায় যে, এ ধরনের যোজক দুটি বাক্যের সংযোগ ঘটিয়ে দ্বিতীয়টি দ্বারা প্রথমটির বিরোধ নির্দেশ করে।

 

 

 

 

 

 

উদাহরণঃ

 

  • আজমাইন চিঠি দিয়েছি কিন্তু উত্তর পায়নি।
  • সারাদিন এত বৃষ্টি হলো, তবুও গরম গেল না।
  • ডাক্তারকে খবর দিয়েছি, কিন্তু সে আসে নি।
  • ভিক্ষুককে টাকা দিতে চাইলাম কিন্তু নিল না।

কারণবাচক যোজক কাকে বলে?

কারণবাচক যোজক : যে যোজক এমন দুটি বাক্যের মধ্যে সংযোগ ঘটায়, যার দ্বারা একটি অন্যটির কারণ নির্দেশ করে, তাকে কারণবাচক যোজক বলে। এক কথায় বলা যায় যে, এ ধরনের যোজক এমন দুটি বাক্যের মধ্যে সংযোগ ঘটায় যার একটি অন্যটির কারণ।

 

 

 

 

 

 

উদাহরণঃ

 

সাপেক্ষ যোজক : যে যোজকগুলো পরস্পর নির্ভরশীল এবং একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে বাক্যে ব্যবহৃত হয় তাদের সাপেক্ষ যোজক বলে। আবার বলা যায়, যে যোজক একে অন্যের পরিপূরক হয়ে বাক্যে ব্যবহৃত হয়, তাকে সাপেক্ষ বা শর্তবাচক যোজক বলে। প্রথাগত ব্যাকরণে এগুলোকে নিত্যসম্বন্ধীয় অব্যয়ও বলা হয়।

উদাহরণঃ

  • যদি টাকা দাও তবে তোমার কাজ হবে।
  • যত গর্জে তত বর্ষে না।
  • যদি পরিশ্রম কর, তবে সফলতা লাভ করতে পারবে।
  • যথা ধর্ম তথা জয়

সাপেক্ষ যোজক কাকে বলে?

 

 

 

 

 

সাপেক্ষ যোজক : যে যোজকগুলো পরস্পর নির্ভরশীল এবং একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে বাক্যে ব্যবহৃত হয় তাদের সাপেক্ষ যোজক বলে। আবার বলা যায়, যে যোজক একে অন্যের পরিপূরক হয়ে বাক্যে ব্যবহৃত হয়, তাকে সাপেক্ষ বা শর্তবাচক যোজক বলে। প্রথাগত ব্যাকরণে এগুলোকে নিত্যসম্বন্ধীয় অব্যয়ও বলা হয়।

উদাহরণঃ

  • যদি টাকা দাও তবে তোমার কাজ হবে।
  • যত গর্জে তত বর্ষে না।
  • যদি পরিশ্রম কর, তবে সফলতা লাভ করতে পারবে।
  • যথা ধর্ম তথা জয়