নিউক্লিয়াস কাকে বলে? নিউক্লিয়াসের গঠন ও কাজ

নিউক্লিয়াস কাকে বলে?

জীব কোষের প্রোটোপ্লাজম এ নির্দিষ্ট পর্দাঘেরা ক্রোমোজোম বহনকারী সুস্পষ্ট যে বস্তুটি দেখা যায় তাকে নিউক্লিয়াস বলে। অর্থাৎ কোষের প্রোটোপ্লাজমের মধ্যে পর্দা দিয়ে ঘেরা কেন্দ্রীয় গঠনটিকে নিউক্লিয়াস বলা হয়। এর আকৃতি গোলাকার ,ডিম্বাকার, বা নলাকার। একে কোষের প্রাণকেন্দ্র বলা হয়।

 

কোন কোষের নিউক্লিয়াস বাদ দিলে কোষ বিভাজিত হতে পারে না। যেমন- মানুষের পরিণত লোহিত কণিকায় নিউক্লিয়াস না থাকার কারণে ওই কোষ বিভাজিত হয় না। সাইটোপ্লাজমীয় বস্তু থেকে পর্দা দিয়ে আলাদা থাকার কারণেই নিউক্লিয়াসের একটি নিজস্ব জগৎ থাকে। যে সমস্ত জীব দেহের কোষে পর্দাঘেরা নিউক্লিয়াস থাকে তাদেরকে ইউক্যারিওটা বলা হয়।আর যে সকল জীব দেহের কোষে পর্দাঘেরা নিউক্লিয়াস থাকে না তাদেরকে প্রোক্যারিওটিক বলা হয়।কোষ বিভাজনের বিভিন্ন অবস্থায় নিউক্লিয়াসের পরিবর্তন হয়।

 

আবার বলা যায়, প্রকৃত কোষের সাইটোপ্লাজমে দ্বিস্তরী আবরণ দ্বারা আবৃত যে গোলাকার অঙ্গাণু ক্রোমাটিন জালিকা ধারণ করে এবং সুস্পষ্টভাবে দেখা যায় তাকে নিউক্লিয়াস বলে। এটি কোষের অপরিহার্য অংশ এবং কোষের যাবতীয় কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এ কারণে কে কোষের মস্তিষ্ক বলা হয়। রবার্ট ব্রাউন সর্বপ্রথম ১৮৩১ সালে অর্কিড পাতার কোষে নিউক্লিয়াস আবিষ্কার করেন ও নামকরণ করেন।

 

 

 

 

 

 

নিউক্লিয়াসের গঠন

একটি সুগঠিত নিউক্লিয়াস সর্বমোট চারটি অংশ নিয়ে গঠিত ।এগুলো হলো-

 

  • নিউক্লিয়ার ঝিল্লি / পর্দা / এনভেলপ
  • নিউক্লিওপ্লাজম
  • নিউক্লিওলাস
  • নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম / ক্রোমাটিন জালিকা /ক্রোমোজোম
  • নিউক্লিয়ার ঝিল্লি / পর্দা / এনভেলপ

নিউক্লিয়াসকে ঘিরে যে দ্বিস্তরী আবরণ থাকে তাকে নিউক্লিয়ার ঝিল্লি বা কেন্দ্রিকা ঝিল্লি বলে। এটি দুটি স্তর বিশিষ্ট। এই ঝিল্লি লিপিড ও প্রোটিন এর সমন্বয়ে তৈরি হয়। এই ঝিল্লিতে মাঝে মাঝে কিছু ছিদ্র থাকে যেগুলোকে নিউক্লিয়ার রন্ধ্র বলা হয়।

 

 

 

 

 

 

নিউক্লিয়ার ঝিল্লির কাজ

  • তন্তুময়
  • দানাদার
  • ম্যাট্রিক্স

নিউক্লিওলাসের কাজ

  • বিভিন্ন প্রকার RNA সংশ্লেষণ করে।
  • প্রোটিন সংশ্লেষণ ও সংরক্ষণ করে।
  • রাইবোজোম সংশ্লেষণ করে।
  • নিউক্লিক এসিড ভান্ডার হিসেবে কাজ করে।

নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম / ক্রোমাটিন জালিকা /ক্রোমোজোম

কোষের বিশ্রামকালে অর্থাৎ যখন কোষ বিভাজন চলে না , তখন নিউক্লিয়াসে কুন্ডলী পাকানো সূক্ষ্ম সূতার মতো অংশই হচ্ছে ক্রোমাটিন জালিকা বা নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম।কোষ বিভাজনের সময় এরা মোটা এবং খাটো হয় তাই তখন তাদের আলাদা আলাদা ক্রোমোজোম হিসেবে দেখা যায়।

নিউক্লিয়ার রেটিকুলামের কাজ

  • বংশগতি ও বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে।
  • মিউটেশন, প্রকরণ সৃষ্টি ইত্যাদি কাজেও মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
  • RNA সংশ্লেষণ এর মাধ্যমে প্রোটিনে বার্তা প্রেরণ করে।

নিউক্লিয়াসের কাজ

  • নিউক্লিয়াসকে কোষের মস্তিষ্ক বলা হয়। কোষের সব ধরনের কাজ নিউক্লিয়াস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
  • নিউক্লিক এসিডের ভান্ডার হিসেবে কাজ করে।
  • রাইবোজোম সৃষ্টি করে।
  • RNA সংশ্লেষণ করে।
  • আমাদের দেহের প্রোটিন সংশ্লেষণ ও সংরক্ষণ করে।
  • ক্রোমাটিন জালিকা, নিউক্লিওলাস, নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিয়ার মেমব্রেন ধারণ করে।
  • কোষের সব ধরনের জৈবিক কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • বংশগতি ও বৈশিষ্ট্যসমূহ ধারণ ও বহন করে।
  • নিউক্লিয়াসের বিভাজনের সময় সময় ব্যবহারযোগ্য খাদ্য সঞ্চয় করে।
  • নিউক্লিয়াসের বিভিন্ন অংশ সমূহ ধারণ করে ইত্যাদি।

নিউক্লিওপ্লাজম

নিউক্লিয়ার ঝিল্লির ভেতরে জেলির মত বস্তু বা রস থাকে। একে কেন্দ্রিকারস বা নিউক্লিওপ্লাজম বলে। নিউক্লিওপ্লাজমকে ক্যারিওলিম্ফও বলে। এতে নিউক্লিক অ্যাসিড ,প্রোটিন ,উৎসেচক ও কতিপয় খনিজ লবণ থাকে।

 

  • নিউক্লিওপ্লাজমের কাজ
  • নিউক্লিয়াসের বিভিন্ন জৈবনিক কাজে সাহায্য করে।
  • নিউক্লিওলাস ও ক্রোমাটিন জালিকা ধারণ করে।
  • নিউক্লিয়াস বিভাজন এর সময় ব্যবহারযোগ্য খাদ্য সঞ্চয় করে।
  • নিউক্লিওলাস

নিউক্লিয়াসে যে ছোট ও অধিকতর ঘন গোলাকার বস্তু দেখা যায় তাকে নিউক্লিওলাস বলে। অর্থাৎ, নিউক্লিওপ্লাজমের মধ্যে ক্রোমোজোমের সাথে সংলগ্ন গোলাকার বস্তুকে নিউক্লিওলাস বা বলে। এদেরকে ৩ টি অংশে ভাগ করা যায়। যথাঃ

 

 

 

 

 

  • তন্তুময়
  • দানাদার
  • ম্যাট্রিক্স

নিউক্লিওলাসের কাজ

  • বিভিন্ন প্রকার RNA সংশ্লেষণ করে।
  • প্রোটিন সংশ্লেষণ ও সংরক্ষণ করে।
  • রাইবোজোম সংশ্লেষণ করে।
  • নিউক্লিক এসিড ভান্ডার হিসেবে কাজ করে।

নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম / ক্রোমাটিন জালিকা /ক্রোমোজোম

কোষের বিশ্রামকালে অর্থাৎ যখন কোষ বিভাজন চলে না , তখন নিউক্লিয়াসে কুন্ডলী পাকানো সূক্ষ্ম সূতার মতো অংশই হচ্ছে ক্রোমাটিন জালিকা বা নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম।কোষ বিভাজনের সময় এরা মোটা এবং খাটো হয় তাই তখন তাদের আলাদা আলাদা ক্রোমোজোম হিসেবে দেখা যায়।

নিউক্লিয়ার রেটিকুলামের কাজ

  • বংশগতি ও বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে।
  • মিউটেশন, প্রকরণ সৃষ্টি ইত্যাদি কাজেও মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
  • RNA সংশ্লেষণ এর মাধ্যমে প্রোটিনে বার্তা প্রেরণ করে।

নিউক্লিয়াসের কাজ

  • নিউক্লিয়াসকে কোষের মস্তিষ্ক বলা হয়। কোষের সব ধরনের কাজ নিউক্লিয়াস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
  • নিউক্লিক এসিডের ভান্ডার হিসেবে কাজ করে।
  • রাইবোজোম সৃষ্টি করে।
  • RNA সংশ্লেষণ করে।
  • আমাদের দেহের প্রোটিন সংশ্লেষণ ও সংরক্ষণ করে।
  • ক্রোমাটিন জালিকা, নিউক্লিওলাস, নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিয়ার মেমব্রেন ধারণ করে।
  • কোষের সব ধরনের জৈবিক কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • বংশগতি ও বৈশিষ্ট্যসমূহ ধারণ ও বহন করে।
  • নিউক্লিয়াসের বিভাজনের সময় সময় ব্যবহারযোগ্য খাদ্য সঞ্চয় করে।
  • নিউক্লিয়াসের বিভিন্ন অংশ সমূহ ধারণ করে ইত্যাদি।