পর্যাবৃত্ত গতি
Periodic motion
ঘড়ির পেন্ডুলাম বামে-ডানে দুলতে দেখি বা স্প্রিং-এর সংকোচন-প্রসারণজনিত গতিও আমরা লক্ষ করে থাকি। আমরা দেখতে পাই যে, নির্দিষ্ট সময় পর পর বস্তু দুটির গতির পুনরাবৃত্তি ঘটে। এ ধরনের গতিই হলো পর্যাবৃত্ত গতি।
তাহলে আমরা বলতে পারি, কোনো বস্তুর গতি যদি এমন হয় যে, একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর বস্তুটির গতির পুনরাবৃত্তি ঘটে তবে ওই গতিকে পর্যাবৃত্ত গতি বলে। কোনো গতিশীল বস্তু কণার গতি যদি এমন হয় যে, এটি তার গতিপথে কো্নো নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পর পর একই দিক থেকে অতিক্রম করে, তাহলে সেই গতিকে পার্যাবৃত্ত গতি বলে।
পর্যাবৃত্ত গতিতে চলমান গতিপথ নির্দিষ্ট এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর বন্ধুটি গতিপথের একই বিন্দুকে একই দিক থেকে অতিক্রম করে। এই গতিপথের কোনো নির্দিষ্ট জ্যামিতিক রূপ, যেমন সরলরেখা, বৃত্ত , উপবৃত্ত ইত্যাদি থাকতে পারে, আবার নাও থাকতে পারে। স্প্রিং থেকে ঝুলন্ত কোনো বস্তুকে নিচের দিকে সামান্য টেনে ছেড়ে দিলে সেটি পর্যায়ক্রমে উপর-নিচ করতে থাকে। লক্ষ করলে দেখা যায় যে, বস্তুটি গতিপথের একই বিন্দু দিয়ে নির্দিষ্ট সময় পর পর উপর থেকে নিচে বা নিচ থেকে উপরে যাচ্ছে। বস্তুটির এই গতি সরলরৈখিক পর্যাবৃত্ত গতি (linear periodic motion)।
এক খন্ড পাথরে সুতা বেঁধে স্থির কৌণিক বেগে ঘুরাতে থাকলে পাথরটি বৃত্তীয় পর্যাবৃত্ত গতিতে (rotational periodic motion) আবর্তন করে। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ঘোরে। এক বছর পর পর পৃথিবীর এই গতির পুনরাবৃত্ত হয়। এটি উপবৃত্তীয় পর্যায় গতির (elliptical periodic motion) একটি উদাহরণ।
আবার ধরা যাক, একটি সূতা এলোমেলোভাবে মেঝের উপর রাখা আছে। একটি পিপড়া ওই সুতার ওপর দিয়ে সমদ্রুতিতে হাঁটতে থাকল। দেখা গেল যে পিপড়াটি সূতার যেকোনো স্থান একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর পেরিয়ে যাচ্ছে। এখানে দড়িটির কো্নো নির্দিষ্ট জ্যামিতিক রূপ নেই। তবুও পিপড়ার গতি পর্যাবৃত্ত গতি হব।
সুরযন্ত্রের তার বা বায়ুমণ্ডলের গত, ঘড়ির কাটার গতি, বাষ্প বা পেট্রোল ইঞ্জিনের সিলিন্ডারের মধ্যে পিস্টনের গতি , কঠিন বস্তুতে পরমাণুর স্পন্দন ইত্যাদি হলো পর্যাবৃত্ত গতি।
sin তরঙ্গ
পর্যাবৃত্ত গতিসম্পন্ন কণার স্পন্দন একটি sin তরঙ্গ সদৃশ যার একটি বিস্তার, একটি কৌণিক কম্পাঙ্ক এবং একটি সময়ের রাশি থাকে।
X-অক্ষ অভিমুখে একটি পর্যাবৃত্ত কণার সমীকরণ হলো x=a sin ωt
এখানে,
a=বিস্তার
ω=কৌণিক কপাঙ্ক
t=সময়