তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র মূলতঃ শক্তির নিত্যতা সূত্রের বিশেষ রূপ। বিজ্ঞানী ক্লসিয়াস (Clausius) এই সূত্রকে সাধারণভাবে বর্ণনা করেন। বিজ্ঞানী ক্লসিয়াসের মতে, কোনো সিস্টেমে তাপ শক্তি অন্য কোনো শক্তিতে রূপান্তরিত হলে বা অন্য কোনো শক্তি তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হলে, সিস্টেমের মোট শক্তির পরিমাণ অপরিবর্তিত বা একই থাকে। একে ক্লসিয়াসের মতবাদ বলে।
বিজ্ঞানী ক্লসিয়াস তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রকে নিম্নলিখিতভাবে প্রকাশ করেন।
সূত্রঃ যখন কোনো সিস্টেমে তাপশক্তি সরবরাহ করা হয় তখন সেই তাপশক্তি কিছু অংশ সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং তাপশক্তির বাকি অংশ দ্বারা সিস্টেম তার পরিবেশের উপর বাহ্যিক কাজ সম্পাদন
ধরি, কোনো সিস্টেমে ΔQ পরিমাণ তাপশক্তি সরবরাহ করা হলো। এতে সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ শক্তির পরিবর্তন হলো ΔU এবং সিস্টেম দ্বারা পরিবেশের ওপর বাহ্যিক সম্পাদিত কাজের পরিমাণ হলো ΔW
উপরিউক্ত সূত্রানুসারে, ΔQ = ΔU + ΔW
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পরিবর্তনের সময় এই সমীকরণকে লেখা যায়,
dQ = dU + dW
উপরের সমীকরণের dQ, dU এবং dW রাশিগুলো ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক হতে পারে। তাই তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
১) ΔQ বা dQ ধনাত্মক ধরা হবে যদি সিস্টেমে তাপ সরবরাহ করা হয় এবং ঋণাত্মক হবে যদি তাপশক্তি সিস্টেম থেকে পরিবেশে যায় বা সিস্টেম তাপ হারায়।
২) dU ধনাত্মক হবে যদি সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং dU ঋণাত্মক হবে যদি সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ শক্তি হ্রাস পায়।
৩) dW ধনাত্মক হবে যদি সিস্টেমের দ্বারা পারিপার্শ্বিকের উপর কাজ সম্পাদিত হয় এবং dW ঋণাত্মক হবে যদি পরিপার্শ্ব সিস্টেমের উপর কাজ করে।
কোনো সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ শক্তির পরিবর্তন হচ্ছে সিস্টেমে যে পরিমাণ শক্তি তাপ হিসেবে প্রবাহিত হচ্ছে এবং যে পরিমাণ শক্তি কাজ হিসেবে সিস্টেম থেকে পরিবেশে যাচ্ছে তার পার্থক্যের সমান।
অর্থাৎ dU = dQ – dW